অয়ন শীল (বাঁ দিকে), সুজিত বসু (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
নিয়োগ মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অয়ন শীল। ইডি সূত্রে খবর, তাঁর বাড়ি এবং অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা নথিতে পাওয়া যায় ‘এসবি’ সাঙ্কেতিক অক্ষর। যা থেকে তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওই ‘এসবি’ মন্ত্রী সুজিত বসু হতে পারেন। শুক্রবার ম্যারাথন তল্লাশি সেরে ইডির আধিকারিকরা সুজিতের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর মন্ত্রী এ বিষয়ে মুখ খোলেন। যদিও এক বারও জেলবন্দি অয়নের নাম নেননি তিনি।
অয়ন শীলের সঙ্গে কি তাঁর পরিচয় আছে? ইডির দিনভর তল্লাশি শেষে সুজিত জবাব দেন সেই প্রশ্নের। তিনি বলেন, ‘‘যে সমস্ত লোকের নাম বলছেন, সেই সমস্ত লোকের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। আমি এই সব লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি না। আমি বিভিন্ন জায়গায় যাই। আমার সঙ্গে কেউ যদি দাঁড়িয়ে একটা ছবি তুলে নেয়, আমি কী করব? কিন্তু যাঁর নাম বললেন, তাঁর সঙ্গে সুজিত বোসের কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক সুজিত বোসের নেই।’’ এর পরেই সুজিতকে প্রশ্ন করা হয়, এসবি সাঙ্কেতিক নাম নিয়ে। তার প্রত্যুত্তরে দমকলমন্ত্রী বলেন, ‘‘আরে এসবি তো সুকান্ত হতে পারে, শুভেন্দু হতে পারে। আপনি কেন সুজিত বোসকে বলছেন? ওইটা শুভেন্দু আর সুকান্ত হবে। এসবি মানেই কি সুজিত বোস হয়ে গেল! শুনুন, এই সব ছেঁদো কথার কোনও দাম নেই। যাঁরা এ সব নেয়, তাঁদের বিরুদ্ধে এ সব বলুন। যাঁরা রুমাল পেঁচিয়ে টাকা নেয়, তাঁদের কথা বলুন।’’
ইডি সূত্রের খবর, অয়নের বাড়ি এবং অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা নথিতে ‘এসবি’ সাঙ্কেতিক নামে সুজিতের পরিচয় দেওয়া হয়। সুজিতের নাম এবং পদবির আদ্যক্ষর মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল এই সাঙ্কেতিক নাম। ইডি সূত্রের খবর, তাদের জেরায় অয়ন জানিয়েছেন, পুর নিয়োগে দুর্নীতি ২০১৪-’১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, ২০১৬ সালে দক্ষিণ দমদম পুরসভার উপপ্রধান ছিলেন সুজিত। ওই সময়ের মধ্যে কমবেশি ৬০টি পুরসভায় কর্মী নিয়োগের কাজের বরাত অয়নের সংস্থা ‘এবিএস ইনফোজ়োন’ পেয়েছিল বলে ইডি আধিকারিকদের জানান অয়ন। সেই সময় এক একটি পুরসভায় প্রায় ১০০ জন করে নিয়োগ করা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা মনে করছে, সেই হিসাবে ৬,০০০ নিয়োগ হয়েছিল অয়নের সংস্থার মাধ্যমে। তার মধ্যে প্রায় ৫,০০০ নিয়োগের ফলাফল ‘বিকৃত’ করা হয়েছিল বলেও মনে করছেন ইডি কর্তারা।