বৃহস্পতিবার বিকেলে চারটেয় শেষ হয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থবর্ষ। —ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চারটেয় শেষ হয়ে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থবর্ষ। শুনতে আজব মনে হলেও এমনটাই ঘটতে চলেছে। আর্থিক বছরের শেষ তিন দিন টানা ছুটির কারণেই এমনটা হতে চলেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আর তাতেই বিপাকে পড়তে চলেছে রাজ্য সরকারের বেশ কিছু দফতর। শুক্রবার গুড ফ্রাইডের কারণে সরকারি ছুটি। আবার পরের দু’দিন সরকারি দফতর শনি এবং রবি স্বাভাবিক নিয়মেই ছুটি। ফলে ৩১ মার্চের বদলে ২৮ মার্চই আর্থিক বছরের শেষ দিন হিসাবে ধরা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টের পর আর নতুন করে কোনও বিল জমা দেওয়া যাবে না। এমনকি ট্রেজারি বা ‘পে অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস’ অফিসেও কোনও আর্থিক লেনদেন হবে না। এমনটা হওয়ায় বেশ কয়েকটি দফতর, বিশেষ করে পূর্ত, পরিবহণ, সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি-সহ আরও কয়েকটি দফতর বেশ সমস্যায় পড়েছে। কারণ, আর্থিক বছরের শেষে টানা তিন দিন ট্রেজারি বন্ধ থাকায় সংশোধিত বাজেটের খরচ নিশ্চিত করা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া এই দফতরগুলিকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে থেকে সব আর্থিক লেনদেন বন্ধ হওয়ায় সমস্যা বেড়েছে।
যদিও অর্থ দফতরের একাংশের দাবি, এ বছর যে রাজ্য সরকারের অর্থবর্ষ ২৮ তারিখেই শেষ হচ্ছে, তা বহু আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সব দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও দফতর ভিত্তিক আগাম কোনও ব্যবস্থা না করাতেই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাদের আরও দাবি, শেষ তিন দিনের ছুটির কথা মাথায় রেখে আগেভাগেই নির্দেশিকা জারি করেছিল অর্থ দফতর। সেই নির্দেশিকা মেনে কাজ করতে বলা হয়েছিল সব দফতরকে এবং ট্রেজারিতে নিযুক্ত আধিকারিকদের। সেই নির্দেশিকা মানা হলে এ ভাবে দফতরগুলিকে বিপাকে পড়তে হত না। তবে বিপাকে পড়া দফতরগুলিরও পাল্টা যুক্তি রয়েছে। অর্থ দফতরের নির্দেশিকা তাদের হাতে আসার পরেই তা মেনে কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু পূর্ত, পরিবহণ, সেচের মতো দফতরগুলিকে জেলাভিত্তিক প্রতি দিন কোনও না কোনও নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে অনেক কাজ করতে হয়। সেই সব কাজ করতে বহু ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধার কথা মাথায় রাখতে হয়। সে ভাবেই ট্রেজারির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আচমকা ২৮ তারিখে অর্থবর্ষ শেষ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তবে প্রশাসনের আর একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত শনিবার থেকে টানা ছুটি থাকাতেও সমস্যা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই গত শনি ও রবিবার ছুটি ছিল। সোম এবং মঙ্গলবার দোল আর হোলি উৎসবের কারণে ছুটি থাকায় পর পর চার দিন ছুটি ছিল। বুধ ও বৃহস্পতিবার সরকারি অফিস খোলা হলেও, ফের শুক্রবার থেকে পর পর টানা তিন দিন ছুটি। শেষ ন’দিনে মাত্র দু’দিন সরকারি দফতর খোলা ছিল। সেই কারণেও বহু কাজ করা সম্ভব হয়নি।