প্রতীকী ছবি।
অভিযুক্তেরা যাতে শাস্তি পায়, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাঁদের। সুবিচার অনেকটাই নির্ভর করে তাঁদের উপরে। অথচ অভিযোগ উঠছে, তাঁরাই দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিত পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। তাঁরা মানে কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবীরা। সূত্রের খবর, ওই আদালতের বিভিন্ন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের সরকারি কৌঁসুলিদের অবস্থা আরও খারাপ। দু’বছর ধরে মামলা লড়ার পারিশ্রমিক মিলছে না তাঁদের।
রাজ্যের আইন দফতর সূত্রের হিসেব, কলকাতার নগর দায়রা আদালতে সরকারি আইনজীবী আছেন ৬০ জন। তাঁদের মধ্যে সিনিয়র প্যানেলে রয়েছেন ১৬ জন, জুনিয়র প্যানেলে ৪৪ জন। মুখ্য বিচারক (চিফ জজ), প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফার্স্ট বেঞ্চ), দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত (সেকেন্ড বেঞ্চ), চারটি বিশেষ আদালত (স্পেশাল কোর্ট), ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে সরকারের পক্ষে মামলা লড়েন ওই ৬০ জন আইনজীবী।
সরকারি কোঁসুলি শিবিরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তাঁদের কেউ কেউ ১৪ মাস, কেউ বা ১৫ মাস সরকারি কোষাগার থেকে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। আইন দফতরের এক অফিসার জানান, সাধারণ ভাবে বছরে দু’বার সরকারি আইনজীবীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তাঁদের পারিশ্রমিক জমা পড়ে। কিন্তু কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কেন এত দিন ধরে টাকা জমা পড়ছে না, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ওই অফিসার।
আরও পড়ুন: ভোগান্তি ভুলে প্রতিবাদের উৎসবে হাওড়া
নগর দায়রা আদালতের এক প্রবীণ সরকারি আইনজীবী জানান, রাজ্যের অন্য কোনও নিম্ন আদালতের সরকারি কৌঁসুলিরা এই ধরনের ‘বৈষম্যের শিকার’ হচ্ছেন না। তাঁরা সামান্য দেরিতে হলেও পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। চলতি বছরে বা গত বছর দুর্গা পুজোতেও কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সরকারি কৌঁসুলিরা পারিশ্রমিক পাননি বলে অভিযোগ।
ওই আইনজীবী শিবিরের অন্য একটি অংশের বক্তব্য, সরকারের পক্ষ নিয়ে মামলা লড়ার পারিশ্রমিক না-পাওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ধর্না, বিক্ষোভ করা যায় না। সেই জন্য তাঁরা ধর্নায় বসে বা অবস্থান-বিক্ষোভ করে বিষয়টি নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণও করতে পারেন না।
আইন দফতরের একটি সূত্র জানায়, কলকাতা নগর দায়রা আদালতের সরকারি কৌঁসুলিদের এক দল প্রতিনিধি সপ্তাহ দেড়েক আগে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানান। মন্ত্রী তাঁদের জানান, বিষয়টি অর্থ দফতর দেখছে। ওই সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে পারিশ্রমিকের একাংশ মেটানো হয়েছে। পরের বকেয়া মেটানো হবে শীঘ্রই। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলিরা জানাচ্ছেন, যে-টাকা তাঁরা পেয়েছেন, তা এতই সামান্য যে, বলার নয়।