ফাইল চিত্র।
বাবুল সুপ্রিয়কে বিক্ষোভ দেখাতে আসা যাদবপুরের ছাত্রীদের নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতির ‘কদর্য’ মন্তব্যের পরে অপভাষা প্রয়োগ, অশালীন কটূক্তি এবং হুমকির বাড়বাড়ন্ত নেট-মাধ্যমে। এর মোকাবিলায় শনিবার লালবাজারে সাইবার অপরাধ দমন শাখার দ্বারস্থ হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।
যাদবপুরের ছাত্রীদের পরপর ধর্ষণের হুমকি, ছাত্রদের বাড়ি ফেরার সময় ভয় দেখানোর নানা অভিযোগ। তীব্র নেট-নিগ্রহের শিকার এসএফআই সমর্থক, যাদবপুরের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রী। এ দিন সকালে তিনিই লালবাজারে তাঁর অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভিড়ের মধ্যে যাদবপুরের ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের মুখোমুখি দাঁড়ানো এক ছাত্রীর ছবি নিয়েই শুরু হয় অশালীন প্রচার। ছবির মেয়েটির পরিচয়ে বিভ্রান্তিও তৈরি করা হয়েছে। দর্শন বিভাগের ছাত্রীটি বলেন, ‘‘ইউনিয়ন রুম ভাঙচুরের পরে আমি ফেসবুকে লিখেই ওদের নজরে পড়ি। এর পরে প্রতিবাদের সময়ে বাবুলের কাছাকাছি থাকা একটি মেয়ের ছবি দিয়ে ওটাই আমি বলে প্রচার শুরু হয়েছে। বলা হয়েছে, ওটা আমারই মেকআপ-বিহীন ছবি। আমার ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য আরও বেশি করে আমাকে নিশানা করা হয়। চরম অসভ্যতায় ফেসবুক প্রোফাইল তুলে নিয়েছি। তবে অন্যায়ের সঙ্গে লড়াই ছাড়ব না।’’
বিজেপি বা আরএসএস সমর্থক পরিচয়ে বিভিন্ন প্রোফাইল থেকে লাগাতার ধর্ষণ, খুনের অভিযোগ কী চোখে দেখছে দলীয় নেতৃত্ব?
রাজ্য বিজেপির সাধারণ
সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ দিন বলেন, ‘‘অন্যায় হেনস্থা হলে কেউ পুলিশে অভিযোগ জানাতেই পারেন, তবে যাদবপুরের বিক্ষোভকারীদের নায়ক সাজানো অন্যায়।’’ খানিকটা দিলীপবাবুর সঙ্গে সুর মিলিয়েই তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে মেয়েদের বিরুদ্ধে এমন আইন নেই, নইলে বাবুলের গায়ে পড়ার জন্য ওই মেয়েদের নামেই কেস লেখা যেত।’’
যাদবপুরে আর্টস ইউনিয়নে এসএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথের কথায়, ‘‘ওরা ভাবছে, এ ভাবে ভয় দেখালে আমরা পিছু হটব। দেশ জুড়ে নোংরা হুমকি আর ত্রাস সৃষ্টিই বিজেপির কৌশল। দিলীপবাবুর কুকথার পরে অসভ্যতার মাত্রা বেড়েছে।’’ যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠনের (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বিবৃতিতেও দিলীপবাবুর মন্তব্যের কড়া নিন্দা করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘দিলীপবাবু ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ বলে সরাসরি যাদবপুরে হিংসায় উস্কানি দিচ্ছেন।
এর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা দরকার।’’ অন্য দিকে, বিজেপির ছাত্র নেতা মৃন্ময় দাসের যাদবপুরে মার খাওয়ার কথা ফেসবুকে প্রচার নিয়েও অনেকের প্রশ্ন, বেল্ট পরে এমআরআই করার দৃশ্য কি সত্যি? মৃন্ময় বলেন, ‘‘আমি সিটি স্ক্যান করাচ্ছিলাম। ছবি নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’’