Amitabha Malik

‘তা হলে কে মারল আমার ছেলেকে?’

২০১৭-র জুনে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার পরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দার্জিলিং পাহাড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১৯
Share:

অমিতাভ মালিক। ফাইল চিত্র।

তিন বছর আগে অক্টোবরের এক সকালে টেলিভিশনের পর্দায় ভেসে ওঠা ‘ব্রেকিং নিউজ’-এ রাজ্য পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর খবর জেনেছিলেন সৌমেন মালিক-গঙ্গা মালিকেরা। আর তিন বছর পরে সেই অক্টোবরেরই সন্ধ্যায় ‘ব্রেকিং নিউজ’-এ শুনলেন, বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলের হাত ধরছেন বিমল গুরুং।

Advertisement

২০১৭-র জুনে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ার পরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দার্জিলিং পাহাড়। গ্রেফতারি পয়োয়ানা জারি হয় গুরুংয়ের বিরুদ্ধে। আত্মগোপন করেন তিনি। সে বছর ১৩ অক্টোবর দার্জিলিংয়ের রঙ্গিত নদীর তীরবর্তী সিংলার জঙ্গলে সিরুবাড়ি এলাকায় গুরুংয়ের খোঁজে গিয়েছিল পুলিশ বাহিনী। অভিযোগ, গুরুংয়ের অনুগত বাহিনী আক্রমণ করে পুলিশকে। তাদের ছোড়া গুলিতেই মারা যান অমিতাভ।

তিন বছর ফেরার থাকার পরে বুধবার নাটকীয় আবির্ভাবের পরে গুরং দাবি করেছেন, ‘‘আমি অপরাধী নই। দেশদ্রোহীও নই।’’ যা শুনে অমিতাভের বাবা, মধ্যমগ্রামের পাটুলির শরৎকাননের বাসিন্দা সৌমেন মালিকের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে আসল খুনি কে? কে মেরেছে আমার ছেলেকে?’’

Advertisement

মধ্যমগ্রামের আমরা ক’জন ক্লাবের মাঠে কফিনবন্দি অমিতাভের দেহ আঁকড়ে ধরে স্ত্রী বিউটির কান্নার দৃশ্য এখনও অমলিন অনেকের স্মৃতিতে। সে দিন রাজ্য পুলিশের তৎকালীন ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে বিউটি বলেছিলেন, ‘‘স্যার আমার সব শেষ। ওর (বিমল গুরুং) মাথায় গুলি করুন।’’ এ দিন অবশ্য বহু চেষ্টা করেও বিউটির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কিন্তু গুরুং আর তৃণমূলের এই ‘আঁতাঁত’ মেনে নিতে পারছে না মধ্যমগ্রাম। বিশেষ করে সপ্তাহ খানেক আগেই, অমিতাভের মৃত্যুদিনে যখন তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এত দিন প্রশাসনের প্রতি ‘আস্থা’ রেখে আসা সৌমেনবাবুর দৃশ্যতই হতাশ।

উত্তর ২৪ পরগনার খড়িবাড়িতে একটি এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কারখানায় চাকরি করতেন প্রৌঢ় সৌমেন। কিন্তু করোনাকালে সেই চাকরি আর নেই। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগ। একই অবস্থা অমিতাভের মায়েরও। পুত্র হত্যায় মূল অভিযুক্ত গুরুংয়ের শাস্তি না-হলে তাঁদের ‘যন্ত্রণা’ আরও কয়েক গুণ বাড়বে, বলছেন সৌমেনবাবু। মনে করছেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে তাঁদের পক্ষে বেঁচে থাকাই কঠিন হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement