ফাইল চিত্র
নেট মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিল নাবালক ছেলেটি। তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় এলাকায়। চোখে পড়ে বাবার। ছেলের বক্তব্য সমর্থন করেননি তিনি। বরং ছেলেকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ বছর ষোলোর ছেলেটিকে জুভেনাইল আদালতে তুলেছে। তাকে পাঠানো হয়েছে হোমে।
উত্তর ২৪ পরগনার এই ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য, ছেলেটির মন্তব্য ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে তার বাবা খুবই সচেতন ভূমিকা পালন করেছেন।
জেলার এক থানার আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘ছেলেটি সবে মাধ্যমিক দিয়েছে। একটি অনুচিত কাজ করে ফেলেছে। আমাদের জানিয়েছে, এ জন্য সে অনুতপ্ত। ছেলেটির বাবার ভূমিকা খুবই প্রশংসনীয়।’’
জেলার এক বিডিও মুস্তাক আহমেদ বলেন, ‘‘চারিদিকে নানা ধরনের অসহিষ্ণুতার মধ্যেও ছেলেটির বাবা মনে রাখার মতো উদাহরণ তৈরি করলেন।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, নাবালক ছেলেটি কয়েক দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের কমেন্ট বক্সে গিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে। বিষয়টি জানাজানি হয় শনিবার। ছেলেটির বাবা তাকে ডেকে বকাবকি করেন। বাড়ির পাশে ভিন্ ধর্মের একটি প্রতিষ্ঠানে ছেলেকে নিয়ে হাজির হন। বলেন, তাঁর ছেলের আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। এ জন্য ছেলেকে তাঁরা যা সাজা দেবেন, দিতে পারেন। সকলের সামনে ছেলেকে দু’চার ঘা বসিয়েও দেন।
তাঁকে শান্ত করেন ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তারা। ছেলেকে ক্ষমা করে দিতে বলেন। কিন্তু বাবা হাজির হন থানায়। সন্ধ্যায় ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ছেলেটিকে থানায় ডেকে এনে তার ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়।
ছেলেটির বাবার কথায়, ‘‘মানছি ভুল করেছে। কিন্তু উপযুক্ত সাজাও হওয়া উচিত। না হলে আগামী দিনেও এমন কাজ করে বসতে পারে।’’
টাকি রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী পরিশুদ্ধানন্দ বলেন, ‘‘সব ধর্মের মানুষ যদি ছোটবেলা থেকেই বাড়ির ছেলেমেয়েদের এ ভাবে পরধর্ম সহিষ্ণুতা, ধর্মীয় উদারতার শিক্ষা দেন, তা হলে ভারতের কোথাও ধর্মীয় হানাহানির চিত্র দেখতে হবে না।’’
বাদুড়িয়ার এক মৌলবী ওমর ফারুক নাডভি বলেন, ‘‘এ ভাবে প্রতিটি বাড়িতে বাচ্চাদের শিক্ষা দিতে হবে, যেন তারা সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণ বজায় রাখতে শেখে।’’