ফাইল চিত্র।
বর্ষার মরসুমে এ বার বর্ষণে মোটামুটি ছন্দ বজায় থাকায় চাষের কাজে বিশেষ অসুবিধা হয়নি। কিন্তু বর্ষা বিদায়ের পরেও অসময়ের বৃষ্টি নানান শস্য নষ্টের কারণ হয়েছে। এই হেমন্তেই আগে যে-বৃষ্টি হয়েছে, জমি থেকে তার জল এখনও শুকোয়নি। তার উপরে বৃহস্পতিবার থেকে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কৃষিকাজে তার বড় ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজ্য সরকার।
এ দিন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সরকারের ধারণা, বৃষ্টির প্রভাব পড়বে হুগলি, পূর্ব বর্ধমানের মতো শস্যসমৃদ্ধ জেলাতেও। ফলে খরিফ মরসুমের ধান, আলু, ডাল ও সরষে চাষের ক্ষতি হতে পারে। কৃষি দফতরের কাছে এখনও পর্যন্ত যে-হিসেব এসেছে, তাতে প্রায় ১,৩৬,২৮০ হেক্টর জমিতে আলুর চারা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ৬৯,৭১৮ হেক্টর জমিতে প্রভাব পড়তে পারে সরষে চাষের উপরে। খরিফ মরসুমে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ২,৩৬,৮৬৫ হেক্টর জমির ধান। মুসুর, খেসারির ডাল চাষেও ক্ষতির আশঙ্কা আছে। অকালবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না আনাজপাতিকেও।
কৃষি দফতরের খবর, অন্তত ছ’টি জেলার জমিতে আগের বারের বৃষ্টির জল জমে রয়েছে। কৃত্রিম ভাবে জল বার করার চেষ্টা চলছে। কড়া রোদ উঠলে সেই জল শুকোনোর একটা সম্ভাবনা ছিল। নতুন করে বৃষ্টি নামায় সেই সম্ভাবনা আপাতত মাঠের বাইরে চলে গিয়েছে। জ়ওয়াদ ঘূর্ণিঝড়ের হামলার আশঙ্কায় মাঠের ধান দ্রুত তুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু সবটা তুলে ফেলা সম্ভব হয়নি। অনেক জমিতেই জমা জলে পড়ে রয়েছে ধান। এই অবস্থায় জেলার কৃষি আধিকারিক ও বিমা সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সব কৃষককে যাতে দ্রুত বিমার আওতায় আনা যায়, তার জন্য জেলায় জেলায় প্রচার শুরু হয়েছে। যথাযথ ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা যাতে কৃষকেরা পান, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে বিমা সংস্থাকে।
কৃষিমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কত জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত এবং টাকার অঙ্কে ক্ষয়ক্ষতি ঠিক কত, তা জানার জন্য সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। বৃষ্টি কমলে পুরো তথ্য পাওয়া যাবে।’’