নয়া কৃষি আইনের বিরোধিতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান বিক্ষোভে যোগ গিতে আসা আদিবাসী শিল্পীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিমান বসু। বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আগামী ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি দেশ জুড়ে কৃষকদের কর্মসূচি বহাল রাখার কথাই জোর গলায় জানিয়ে দিলেন অশোক ধওয়লে, যোগেন্দ্র যাদবেরা। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে কলকাতায় লাগাতার অবস্থান চলছে কৃষক সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির ডাকে। সেই অবস্থানে যোগ দিতে এসেই বুধবার ধওয়লে, যাদবেরা জানিয়েছেন, আগামী ২৫ তারিখ রাজ্যে রাজ্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। আর ২৬ তারিখ ‘কৃষক প্রজাতন্ত্র দিবস’-এ দিল্লিতে হবে ট্রাক্টর মিছিল।
সমন্বয় কমিটির ডাকে ধর্মতলায় অবস্থান চলার কথা ২২ তারিখ পর্যন্ত। তাদের পরিকল্পনা ছিল, এ দিন থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনের অবস্থান হবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। কিন্তু এক দিনের বেশি সেখানে অবস্থান চালানোর অনুমতি দেননি সেনা কর্তৃপক্ষ। তাই রাত থেকে ফের ওয়াই চ্যানেলে ফিরে গিয়েছেন অবস্থানকারীরা। তার আগে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে এ দিনের অবস্থানে উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু-সহ ১৬ দলের নেতা-কর্মীরা। ওয়াই চ্যানেলের অবস্থানে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে যোগ দেওয়ার কথা ‘শিল্পী, সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী মঞ্চ’-এর প্রতিনিধিদের।
কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ধওয়লে এ দিনের অবস্থান কর্মসূচিতে বলেছেন, মোদী সরকারকে পিছু হঠতে বাধ্য না করিয়ে কৃষকেরা থামবেন না। তবে পাশাপাশিই এ রাজ্যের ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। ধওয়লে বলেন, ‘‘বাংলার কৃষকেরা জানেন, মোদী ও দিদির সরকারের জন্যই তাঁদের দুরবস্থা। বাংলাতেও কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। অথচ ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) কাছে রাজ্য সরকার দাবি করেছে, এখানে আত্মহত্যার ঘটনা নেই!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, কেরলে বাম সরকার ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ১৮৮০ টাকার সঙ্গে ৯০০ টাকা যোগ করে কৃষকদের ২৭০০ টাকা দিচ্ছে। বাংলার সরকার কেন তেমন পদক্ষেপ করছে না?
মহারাষ্ট্রে ‘কিষাণ লং মার্চ’-এর অন্যতম কারিগর ধওয়লে জানান, এ বার নাসিক থেকে কৃষকেরা গাড়িতে মুম্বই আসবেন। পদযাত্রা নয়। মুম্বইয়ে ২৫ তারিখ আজাদ ময়দানে সভা ও রাজভবন অভিযান হবে। ওই সমাবেশে থাকার জন্য শিবসেনা, এনসিপি এবং কংগ্রেস নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ধওয়লেরা। ‘স্বরাজ ইন্ডিয়া’ দলের নেতা যোগেন্দ্র এ দিন বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসে শান্তিপূর্ণ ভাবেই ট্রাক্টর মিছিল হবে। আমাদের তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ আদালতেও সে কথা জানিয়েছেন। কিন্তু দিল্লির পুলিশ যে ভাবে সেই কর্মসূচি বন্ধ করার চেষ্টা করছে, সেটা হাস্যকর! স্বস্তির কথা যে, সুপ্রিম কোর্ট এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি।’’