কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের সংশোধিত কৃষি আইনের বিরোধিতায় কলকাতায় পথে নামল প্রদেশ কংগ্রেস। মিছিল বন্ধ করে দেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ধস্তাধস্তিও বাধল। পরে রাজ্যপালের মাধ্যমে তারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানাল ‘কালা কানুন’ প্রত্যাহারের।
সর্বভারতীয় কংগ্রেস সোমবার সব রাজ্যেই কৃষি আইনের প্রতিবাদে কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। সেই কর্মসূচি অনুযায়ীই এ দিন মেয়ো রোডে গাঁধীমূর্তির নীচে জমায়েত করেছিল প্রদেশ কংগ্রেস। কৃষি-প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছিল ট্রাক্টর, ধানের চারা। হাজির ছিলেন দলের রাজ্য নেতারা এবং একাধিক বিধায়ক। কিন্তু প্রবল বৃষ্টির মধ্যে মিছিল শুরু হতেই পথ আটকায় পুলিশ। প্রথমে ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। তার পরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে যুব কংগ্রেস, ছাত্র পরিষদ-সহ প্রতিবাদী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের। ঘটনাস্থল থেকে ২২ জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ছাড়া পেয়ে ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ, যুব কংগ্রেসের শেখ হবিবুর রহমান-সহ বেশ কয়েক জন কিছু ক্ষণ রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দিল্লিতে থাকলেও এ দিনের কর্মসূচিতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার, সন্তোষ পাঠক থেকে শুরু করে আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, ঋজু ঘোষাল, যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান-সহ রাজ্য স্তরের প্রায় সব নেতাই ছিলেন।
প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘কৃষক ও শ্রমিকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অগণতান্ত্রিক উপায়ে একের পর এক বিল পাশ করাচ্ছে মোদী সরকার। গোটা দেশের মানুষ এই স্বৈরাচারের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন।’’ মান্নানের অভিযোগ, ‘‘মেয়ো রোড বা অন্যত্র কেন্দ্রের একই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তৃণমূলের কর্মসূচি হয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসকে বাধা দেওয়া হচ্ছে!’’ বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী, সুখবিলাস বর্মা, অসিত মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে গিয়েছিলেন মান্নান ও প্রদীপবাবু। কৃষি ও শ্রম আইন সংশোধনের প্রতিবাদে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে চিঠি দিয়ে অধীরবাবুও বলেছেন, ‘অতিমারির মোড়ককে কাজে লাগিয়ে একটা কৃষকদের জন্য একটা বিপর্যয়কে মোদী সরকার যে ভাবে পুঁজিপতিদের জন্য সুযোগে পরিণত করার চক্রান্ত করল, অন্নদাতা কৃষক ও শ্রমিকেরা তা কখনও ভুলবেন না’!
ভগৎ সিংহের জন্মদিনে এ দিনই মিন্টো পার্কে তাঁর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে কৃষি আইনের প্রতিবাদ জানিয়েছে কিষাণ সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। কৃষক সংগঠনগুলির তরফে তুষার ঘোষ, অভীক সাহা, কার্তিক পালেরা সেখানে অভিযোগ করেন, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ যে ভারত গড়ে তোলার জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রাণ দিয়েছিলেন, সেই দেশকেই আবার ব্রিটিশ শাসকদের মতো বণিক ও পুঁজিপতিদের স্বার্থে বিকিয়ে দিচ্ছে মোদী সরকার।