Cardiac Arrest

Hospitals: সাত হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে হন্যে হৃদ্‌রোগী

যে সব হাসপাতালে হত্যে দিয়েও তিনি চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ, তার মধ্যে পাঁচটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

চিকিৎসা পরিষেবা পেতে জেলা ও কলকাতা মিলিয়ে সাতটি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ এক রোগীকে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

রোগী নদিয়ার নবদ্বীপ থানার বামুনডাঙা এলাকার বাসিন্দা এক গৃহশিক্ষক। নাম, ভক্ত বিশ্বাস। যে সব হাসপাতালে হত্যে দিয়েও তিনি চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ, তার মধ্যে পাঁচটি সরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সেগুলির কোনওটিই ব্লক বা মহকুমা স্তরের হাসপাতাল নয়, বরং জেলা ও মেডিক্যাল কলেজ স্তরের নামী হাসপাতাল।

ভক্তবাবুর হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। বুধবার রাতে তাঁর বুকে যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ভর্তিও করা হয়। কিন্তু চিকিৎসক এসে পরীক্ষা করে জানান যে, হৃদযন্ত্রের অবস্থা খারাপ। এর চিকিৎসার পরিকাঠামো জেলা হাসপাতালে নেই। তাঁকে কল্যাণীর গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে রেফার করা হয়।

Advertisement

পরিবারের দাবি, বিশেষ ভাবে হৃদ্‌রোগের হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও এর পরে গান্ধী হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর হার্ট ব্লক হয়ে গিয়েছে। এর চিকিৎসার পরিকাঠামো তাঁদের হাসপাতালেও নেই। তাঁরা রোগীকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন। তখন বাড়ির লোক তাঁকে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান।

পরিবারের অভিযোগ, সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, আগে রোগীকে আউটডোরে দেখাতে হবে। সেখানকার ডাক্তারেরা মনে করলে তবে ভর্তি করা হবে। এতে প্রচুর সময় লাগবে বুঝে বাড়ির লোক আর দেরি না করে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান। কিন্তু অভিযোগ, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন যে, রোগীর চিকিৎসায় প্রচুর অর্থ খরচ হবে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা বললে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, মেডিসিনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কাজে আসবে না। একমাত্র অস্ত্রোপচার করলেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে টাকা পাওয়া যায়! তখন সেখান থেকে ভক্তবাবুকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়ির লোকের অভিযোগ, সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানিয়ে দেন যে, হৃদ্রোগের সঙ্গে রোগীর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে। ভর্তি হওয়ার কথা হাসপাতালের টিকিটে লিখে দিলেও তিনি স্ট্যাম্প মারেননি। উল্টে পুলিশ ডেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।

তখন তাঁরা যান নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে। সেখানেও জরুরি বিভাগে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকলেও রোগীকে ভর্তির ব্যাপারে চিকিৎসকেরা উদ্যোগী হননি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা ভক্তবাবুকে কৃষ্ণনগরের ফেরত এনে এক বেসরকারি হাসপাতালে যান। কিন্তু তারাও জানায়, এই চিকিৎসার পরিকাঠামো তাদের নেই।

অগত্যা আবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে এনেই রোগীকে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক। ওই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দেবব্রত দত্ত বলছেন, “আমাদের হাসপাতালে কোনও কার্ডিওলজিস্ট নেই। জেনারেল মেডিসিনের চিকিৎসকেরাই যতটা পারেন চিকিৎসা করেন। রোগীর অবস্থা জটিল হলে রেফার করতে বাধ্য হই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement