প্রতীকী চিত্র।
ভোট-ব্যাঙ্কে ভয়াবহ ধস চলছে। সংগঠনের হালও তথৈবচ। এমন বিপর্যয়ের মধ্যেও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিচ্ছে সিপিএমের সম্মেলন-পর্বে। কোথাও দুই গোষ্ঠীর মত-বিরোধ তুঙ্গে উঠে সম্মেলন প্রায় ভেস্তে দিচ্ছে, কোথাও আবার কমিটি দখল ঘিরে সংঘাতে সম্মেলন স্থগিত করতে হয়েছে।
শাখা শেষ করে সিপিএমের এরিয়া কমিটি স্তরে এখন সম্মেলন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই স্তরেই বিবাদের রিপোর্ট আসতে শুরু করেছে সিপিএম নেতৃত্বের কাছে। পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে সেখানে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বকেই। কলকাতার উপকণ্ঠে বিধাননগর-১ এরিয়া কমিটির সম্মেলনে যেমন গণ্ডগোল বড় আকার নেওয়ায় গোটা বিষয়টি স্থগিত করতে হয়েছে। সিপিএম সূত্রের খবর, দলের ক্ষমতাসীন শিবিরের তরফে ওই কমিটির জন্য ১১ জনের নামের প্যানেল প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু সম্মেলনে সেই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে ৭ জনের পাল্টা নাম জমা পড়ে। যাঁদের পাল্টা নাম এসেছিল, তাঁদের কারও কারও বিরুদ্ধে দলের তহবিল নয়ছয় থেকে শুরু করে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে সরব হয় অন্য একাংশ। বচসা বাধে কমিটি নিয়ে ভোটাভুটির আগেই। শেষ পর্যন্ত দলের নেতৃত্বের প্রস্তাবিত প্যানেলের ৯ জন কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু তার পরেও গোলমাল থামেনি। দু’পক্ষের হাতাহাতি এবং চেয়ার ছোড়াছুড়ির উপক্রম হয়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের তরফে উপস্থিত পর্যবেক্ষক দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে রাতে সম্মেলন স্থগিত করে দেন।
প্রকাশ্যে অবশ্য কোন্দলের কথা স্বীকার করেননি সিপিএম নেতৃত্ব। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে গণতন্ত্র আছে। কিছু বিষয় নিষ্পত্তি করার জন্য আলোচনা চলছিল। কিন্তু রাত হয়ে গিয়েছিল, হল বুকিং-এর সময় ফুরিয়ে গিয়েছিল। তাই সম্মেলন তখনকার মতো স্থগিত করা হয়েছে। আবার আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’
কলকাতা জেলার অধীন টালিগঞ্জের একটি এরিয়া কমিটির সম্মেলনেও বিবাদের ঘটনা সামনে এসেছে। টালিগঞ্জ এলাকার দুই সিপিএম নেতার শিবিরের মধ্যে বিতণ্ডা বেধেছিল সম্মেলনে। জেলা নেতৃত্বের পর্যবেক্ষক সম্মেলন স্থগিত করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। পরের দিন আবার ডেকে সম্মেলন সম্পূর্ণ করতে হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।