তথ্যসন্ধানী দলের সদস্যরা কথা বলছেন সন্দেশখালির বাসিন্দাদের সঙ্গে। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ হাতে নিয়ে সন্দেশখালি পৌঁছল দিল্লি থেকে আসা তথ্যসন্ধানী দল। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট দিল্লির তথ্যসন্ধানী দল বা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেয়। সেই আদেশের পর হাই কোর্ট নির্দেশিত দিনেই সন্দেশখালি পৌঁছলেন দলের সদস্যরা। গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলবে দিল্লির তথ্যসন্ধানী দলটি। তবে ১৪৪ ধারা জারি করা এলাকায় তাঁরা ঢুকতে পারবেন না। রবিবার সকালে ১১টি জায়গা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। এর ফলে এখন সন্দেশখালির ১২টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি থাকল।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে পটনা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নরসিংহ রেড্ডি, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস রাজপাল সিংহ, আইনজীবী চারুওয়ালি খন্না, আইনজীবী তথা প্রাক্তন যুগ্ম রেজিস্ট্রার ওমপ্রকাশ ব্যাস, সাংবাদিক সঞ্জীব নায়েক, আইনজীবী ভাবনা বজাজ সন্দেশখালি রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা বলে তাঁদের আটকে দেয়। ফিরে এসে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির সদস্যরা রাজ্যপালের কাছে এ ব্যাপারে নালিশ জানান। তার পর দ্বারস্থ হন কলকাতা হাই কোর্টের। সেই মামলায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি কৌশিক চন্দ তাঁদের শর্তসাপেক্ষে ৩ মার্চ সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দেন। সেই মতো রবিবার সকালে দলের সদস্যরা পৌঁছন ধামাখালি। সেখানে পুলিশ আদালতের নির্দেশ দেখার পর সদস্যদের কাছ থেকে লিখিত নেয়। তার পর ছ’জনকেই সন্দেশখালি ঢোকার অনুমতি দেয় পুলিশ। কিন্তু ধামাখালি থেকে তাঁরা নৌকায় চাপেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের সদস্যরা প্রথমে একটি লঞ্চে উঠে বসেছিলেন। কিছু ক্ষণ পর তাঁদের লঞ্চ থেকে নামতে দেখা যায়। এর পর নৌকা করে নদী পেরিয়ে তাঁরা পৌঁছন সন্দেশখালি। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এঁরা সকলেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লইয়ার্স ফর জাস্টিস’-এর সদস্য। ২০২৩ সালের গোড়ায় এই সংগঠনের সদস্যেরা বাংলায় এসেছিলেন। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন বিজেপি কর্মীদের সঙ্গেই মূলত কথা বলেছিলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) পাশ করা চাকরিপ্রার্থী থেকে আইনি বাধার মুখে পড়া ব্লগার ও ইউটিউবারদের অভিযোগও শোনেন। গতবার রামনবমীতে রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল। সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেও ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাজ্যে এসেছিল। সেই সময় তৃণমূল এই সংগঠনকে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ তুলেছিল।
এ দিকে সন্দেশখালিতে রবিবার সকালে ১১টি জায়গা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নেয় পুলিশ-প্রশাসন। এর ফলে এখন সন্দেশখালির ১২টি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি থাকল।