প্রাথমিক ভাবে হাওয়ালার মাধ্যমে বিপুল টাকা বিদেশে সরানো হয়েছিল, মনে করছে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ কাণ্ডে দুবাই-যোগ ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। প্রতারণা নিয়ন্ত্রণ শুধু নয়, প্রতারণার কোটি কোটি টাকা দুবাই-সহ একাধিক দেশে সরিয়েছিল অভিযুক্ত। সূত্রের খবর, ধৃত চিরাগ কপূরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য হাতে পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ফলে অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ গ্রেফতার হলেও এই চক্রে আরও বড় মাথা যুক্ত থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না লালবাজারের তদন্তকারীরা।
ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে দেশ জুড়ে প্রতারণার অন্যতম ‘মাস্টারমাইন্ড’ চিরাগকে বৃহস্পতিবারই বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। ট্রানজ়িট রিমান্ডে শুক্রবার তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। ধৃত চিরাগকে এ দিন কলকাতার সিজেএম আদালত তোলা হলে বিচারক আগামী ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে সারা দেশে এক হাজারের বেশি লোককে ঠকিয়েছিল চিরাগ-সহ বাকি অভিযুক্তেরা। হাতিয়ে নেওয়া হয় কয়েকশো কোটি টাকা। সেই টাকার বড় অংশ বিদেশে সরিয়ে ফেলা হয়। ফলে, গোটা প্রতারণা-চক্র বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রণের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। এমনকি বিদেশে চক্রের আরও ‘মাথা’দের বসে থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে হাওয়ালার মাধ্যমে বিপুল টাকা বিদেশে সরানো হয়েছিল, মনে করছে পুলিশ। দুবাই-সহ একাধিক দেশে সেই টাকা পাঠানোর তথ্য মিলেছে। বিদেশে পাঠানো টাকার অঙ্ক সম্পর্কে তদন্তকারীরা নির্দিষ্ট ভাবে বলতে না পারলেও সেটা যে কয়েকশো কোটি, তা নিয়ে নিশ্চিত তাঁরা। এমনকি, প্রতারণার অঙ্ক এবং প্রতারিতের সংখ্যা বাড়তে পারে, মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, প্রতারণার টাকা সরাতে জাল নথি ব্যবহার করে একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খুলেছিল অভিযুক্ত। জাল নথিও মিলেছে। কোম্পানির নামে একাধিক অ্যাকাউন্টও তৈরি হয়। এক তদন্তকারী কর্তা বলেন, ‘‘গোটা চক্র এ দেশে বসে নিয়ন্ত্রিত হত, না কি বাইরে থেকে, তা দেখা হচ্ছে। চক্রের জাল যে বিস্তৃত, তার একাধিক প্রমাণ মিলেছে। সারা দেশে প্রতারিতের সংখ্যাও বাড়তে পারে।’’