বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বৈঠকে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র-সহ আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।
ইয়াস এবং পূর্ণিমার কটাল জোড়া ধাক্কায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার নদী এবং সমুদ্র বাঁধে তৈরি হওয়া ক্ষত এখনও শুকোয়নি। এর মধ্যেই আগামী জুন মাসে আসছে আরও দু’টি ভরা কটাল। ওই সময়ে জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কা সামলানোই চ্যালেঞ্জ সেচ দফতরের কাছে। বিপর্যয় এড়াতে বাঁধ মেরামতিকেই পাখির চোখ করছেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে এমনটাই জানিয়েছেন সৌমেন।
ইয়াস এবং ভরা কটালের জেরে গোটা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গোসাবা, সাগর, নামখানা, কুলতলি এবং পাথরপ্রতিমা ব্লকে। বাঁধ মেরামতি শুরু হলেও আগামী ১১ জুন এবং ২৬ জুন আবার বড় কটাল আসছে। তাই ১১ জুনের আগেই সব জায়গায় সাময়িক ভাবে বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ করতে চাইছে সেচ দফতর।
বৃহস্পতিবার বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জের হাতিকর্নার, দাসকর্নারের ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন সেচ মন্ত্রী। কথা বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। কাকদ্বীপে বৈঠকের পর গুরুত্বপূর্ণ দফতর এবং জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কটালের জলোচ্ছ্বাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল হিসাবে স্থির হয়েছে, আপাতত সাময়িক প্রতিরোধের জন্য বাঁধ মেরামত করা হবে। দুর্গত এলাকাগুলিতে পরবর্তী কালে উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে স্থায়ী বাঁধ তৈরি হবে। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, ‘‘স্থায়ী বাঁধ তৈরির ক্ষেত্রে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বৈঠকে। বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে ভাঙন কবলিত এলাকায় সমুদ্রের পাড়ে সিন্থেটিক চাদর এবং জিও জুট পেতে তার উপর পাইলিং করে বাঁধ তৈরির বিষয়টি উপস্থাপন করেছিলাম। সেচ মন্ত্রীকেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছি। তবে আগামী দু’টি বড় কটাল আটকানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।’’
সৌমেন বলেন, ‘‘জলোচ্ছ্বাসের জেরে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার বাঁধ। বাঁধগুলির পর্যবেক্ষণ চলছে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ বাঁধ মেরামতি শুরু করে দিয়েছে সেচ দফতর।’’ কাকদ্বীপের মহকুমা অরণ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সেচ-সহ অন্যান্য দফতরগুলির সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে কাজ তদারকি চলছে।’’