বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ছবি পিটিআই।
একটি ফেসবুক পোস্ট: ‘বর্গি দেশের এক উজির পশ্চিমবঙ্গে বার বার আঘাত হানছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে সঙ্গে আছে কিছু বর্গি পেয়াদা।’ লেখক দেব সাহা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত সহায়ক। তা নিয়েই শুক্রবার তোলপাড় বিজেপি মহল। ডামাডোলের মুখে পোস্টটি পরে তুলে নেওয়া হলেও জের মেটেনি।
বিজেপির সাংগঠনিক রদবদলে আকস্মিক ভাবে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরানোর সঙ্গে সঙ্গেই দলের গোষ্ঠী রাজনীতির আগুনে ঘৃতাহুতি হয়েছে। রব উঠেছে দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠ ওই আরএসএস নেতাকে সরানোর অর্থ আসলে তাঁরই ডানা ছাঁটা। দিলীপবাবুকে রাজ্য সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, তেমন কথাও হাওয়ায় ঘুরছে। যদিও এ দিন পর্যন্ত দিলীপবাবু থেকে শুরু করে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় পর্যন্ত সকলেই এ ধরনের কোনও সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। দিলীপবাবু, মুকুলবাবু দু’জনেই আলাদা ভাবে বলেন, এ ধরনের কোনও সম্ভাবনার কথা তাঁদের জানা নেই। রাজ্য দলে এক জন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হতে পারে, সেই গুঞ্জন অবশ্য এখনও জারি আছে। দলের অনেকের মতে, যদি আদৌ তা হয়, তবে সেটিও হবে দিলীপবাবুর ডানা ছাঁটার আর একটি ধাপ। সে ক্ষেত্রে তাঁকে সরাসরি পদচ্যুত করার প্রয়োজনও কমবে। অর্থাৎ ‘ক্ষমতা খর্ব’ করে দিয়ে তাঁকে পদেই রাখা হবে।
এমন পরিস্থিতিতে দিলীপবাবুর আপ্ত সহায়কের ফেসবুক পোস্ট বিজেপির দলীয় কোঁদলে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। ‘বর্গি’ বলতে তিনি দিলীপ-বিরোধী কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ইঙ্গিত করেছেন বলে অনেকেরই ধারণা। আর সে ক্ষেত্রে কৈলাসকে সামনে রেখে ‘বর্গি পেয়াদা’ বিশেষণ দিয়ে মুকুলবাবু পর্যন্ত আঘাত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও দিলীপবাবুর সাফাই, ‘‘দেব ছোট ছেলে। রাজনীতিতে অপরিণত। এত ভেবে ও কিছু লেখেনি। তবে এ সব নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে দেখে ও পোস্টটা মুছে দিয়েছে।’’
সল্টলেকে ইজেডসিসি-তে বিজেপির দুর্গাপুজো মণ্ডপে এ দিন লক্ষ্মীপুজোও হয়। দিলীপবাবুকে অবশ্য সেখানে দেখা যায়নি। ছিলেন দলে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তবে তিনি দলের অন্দরের টানাপড়েন নিয়ে কিছু বলেননি। বলেছেন, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে শিল্পনীতি কী হবে, সে বিষয়ে তাঁরা শিল্পপতিদের ডেকে পরামর্শ চাইবেন। ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে সেই কর্মসূচি হবে।