nakashipara

জমিজটে আটকে সম্প্রসারণ, জাতীয় সড়কে তাই মরণফাঁদ

নদিয়ার নাকাশিপাড়া ব্লকের অর্ন্তগত সলি-তিনচারা মোড়ের কাছেই ওই অসম্পূর্ণ অংশের জন্য চার লেন রাস্তা দু’লেনের হয়েছে। সেখানে লেন পরিবর্তন করতেই হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৪৯
Share:

নদিয়ায় বেথুয়াডহরি টোল প্লাজ়ার কাছে দুর্ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র।

বেথুয়াডহরি টোল প্লাজ়ার আগে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অসম্পূর্ণ অংশের দৈর্ঘ্য বড় জোর পাঁচশো মিটার। অথচ জমিজটের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ওই অংশে আটকে রয়েছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। লেন পরিবর্তন করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। শুক্রবার সকালে তেমনই এক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল পাঁচ জনের।

Advertisement

নদিয়ার নাকাশিপাড়া ব্লকের অর্ন্তগত সলি-তিনচারা মোড়ের কাছেই ওই অসম্পূর্ণ অংশের জন্য চার লেন রাস্তা দু’লেনের হয়েছে। সেখানে লেন পরিবর্তন করতেই হয়। মুখোমুখি চলে আসে উল্টো দিকের গাড়ি। প্রশাসন সূত্রের বক্তব্য, প্রায় এক দশক আগে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছিল। তখনই জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করে প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে জমির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। অভিযোগ, কোথাও এক শতক জমির জন্য তিন লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে, আবার তার পাশের জমির দামই হয়তো শতকে লাখ পেরোয়ি। এটা মেনে নিতে পারেননি অনেকেই। ক্ষুব্ধ জমি মালিকেরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন এবং অধিগ্রহণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জমিদাতা শুক্রবার দাবি করেন, “ওই সময়ে আমাদের জমি যে দামে নেওয়া হয়েছিল, তা তখনকার বাজারদরের চেয়ে অনেকটাই কম ছিল। ফলে অনেকেই টাকা নেয়নি। তার পরে প্রশাসন সমস্যার সামাধানে এগিয়ে আসেনি।’’

Advertisement

আর এক জমি-মালিক আজমল শেখ বলেন, ‘‘সরকার আমার ১৬ শতক জমি অধিগ্রহণ করতে চেয়েছিল। আমি রাজিও ছিলাম। কিন্তু পরে দেখা গেল, শতক প্রতি ২৬০০ টাকা দাম দিতে চাইছে। ওই দামে জমি দেব কী করে? এই নিয়ে প্রশাসনের তরফে একাধিক বার বৈঠক করা হয়েছে, কিন্তু সুরাহা হয়নি। তাই আমরা হাই কোর্টে মামলা করেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সঠিক দাম না পাওয়া পর্যন্ত জমি দেব না।’’

নদিয়াতেই দেবগ্রামের ভাগা-চাঁদপুরের কাছে প্রায় পাঁচশো মিটার ও দেবগ্রাম বাজার এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাও জমিজটের কারণে দুই লেনের হয়ে রয়েছে। এ দিন দুর্ঘটনার পর নদিয়া জেলা প্রশাসনের কর্তারা ওই সব জায়গা দেখতে যান। দ্রুত ওই সব জায়গায় ব্যারিকেড বসানো হবে, দেখার সুবিধার জন্য ডিভাইডারে গাছ ছেঁটে দেওয়া হবে এবং গ্লোসাইন বসানো হবে বলে প্রশাসন সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

কৃষ্ণনগর সদর মহকুমাশাসক চিত্রদীপ সেন বলেন, “জমির বিষয়টি হাই কোর্টে বিচারাধীন। তাই তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে জাতীয় সড়কে চালকদের সুবিধার জন্য শনিবারের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় সাংসদ মহুয়া মৈত্রও এ দিনের দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ দিন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়িকে চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তিনি অনুরোধ করেছেন, যে অংশটিগুলিতে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে, তা যেন দ্রুত শেষ করতে গডকড়ির মন্ত্রক যেন উদ্যোগী হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement