বুধবার গভীর রাতে করিনা কপূর এবং সইফ আলি খানের বাড়িতে হামলা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বুধবার রাত দেড়টা। বান্দ্রা পশ্চিমের ‘সৎগুরু শরণ’ ভবনে তখন রাতের নিস্তব্ধতা। আচমকা সেই অন্ধকার চিরে যায় মহিলা কণ্ঠের চিৎকারে। বাড়ির হলঘরে অচেনা ব্যক্তিকে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন করিনা কপূর। তার পরের ঘটনাপ্রবাহে ছিল ধস্তাধস্তি, ছুরি, আঘাত আর রক্ত। নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীর ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছেন করিনার স্বামী তথা বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খান। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন করিনা। সইফ এবং বাড়ির বাকিরা বাড়িতেই ছিলেন। রাত দেড়টা নাগাদ পার্টি থেকে বাড়ি ফেরেন করিনা। হলঘরে ঢুকে তিনিই প্রথম দেখতে পান হামলাকারীকে। অচেনা ব্যক্তিকে দেখে চিৎকার করে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর চিৎকার শুনে প্রথমে বেরিয়ে এসেছিলেন এক পরিচারিকা। হলঘরের কাছেই তাঁর ঘর। হামলাকারীকে বাধা দিতে তিনিই প্রথম এগিয়ে যান। সেই সময়ে পুত্র তৈমুরকে সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত ভিতরের ঘরে চলে যান করিনা।
হলঘর থেকে স্ত্রীর চিৎকার শুনে তত ক্ষণে বেরিয়ে এসেছেন সইফ নিজে। পরিচারিকার সঙ্গে অচেনা ব্যক্তির ধস্তাধস্তি হচ্ছে দেখে তিনি বাধা দিতে যান। সেই সময়ে ধারালো ছুরি বার করে এলোপাথাড়ি কোপ মারেন অভিযুক্ত। সইফ রক্তাক্ত হন। তার পরেই হামলাকারী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি, পরিচারিকাই প্রথম ওই হামলাকারীকে দেখেন। করিনা পরে এসেছিলেন।
সইফের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে চিহ্নিত করেছে মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। কিন্তু এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। তাঁর খোঁজ চলছে। সেই সঙ্গে পুলিশ পরিবারের লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মূল ঘটনার দু’ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সিসিটিভিতে কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, আগে থেকেই ওই বাড়িতে ঢুকে বসেছিলেন অভিযুক্ত। কেউ কেউ বলছেন, তিনি সইফ-করিনার কনিষ্ঠ পুত্রের ঘরে লুকিয়ে ছিলেন। মূলত চুরির উদ্দেশ্যেই এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশের সন্দেহ, পাশের বাড়ি থেকে সইফের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন হামলাকারী। ঘাপটি মেরে বসেছিলেন তাঁর পুত্রের ঘরে। হামলাকারী বাড়ির এক পরিচারকের পূর্বপরিচিত বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সইফ। তাঁর শরীরে ছ’বার ছুরির আঘাত লেগেছে। কিছু আঘাত গুরুতর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সইফের মেরুদণ্ডের খুব কাছে একটি আঘাত রয়েছে। তবে আপাতত অভিনেতার অবস্থা স্থিতিশীল।