Excercise

ধমনীর সঙ্কোচনে বিপদ ব্যায়ামেও

আইআইটি খড়গপুরের গবেষকেরা সাম্প্রতিক এই গবেষণায় দেখেছেন,  ধমনীতে যদি আগের থেকেই অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেনোসিসজনিত সঙ্কোচন থাকে, উচ্চতর হৃৎস্পন্দন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩ ০৬:৩৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

যাঁদের সঙ্কুচিত ধমনী রয়েছে, শরীরচর্চা করলে তাঁদের ক্ষেত্রে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) খড়্গপুরের এক গবেষণায় এমনই দাবি করা হয়েছে। গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ‘ফিজিক্স অব ফ্লুইডস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisement

এই গবেষক দলে রয়েছেন আইআইটি খড়্গপুরের মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক সোমনাথ রায়, সুমন চক্রবর্তী এবং দুই রিসার্চ স্কলার পিরু মোহন খান ও সিদ্ধার্থ শর্মা। মানুষের গলার দু’পাশ দিয়ে ক্যারোটিড নামের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী রয়েছে। ধমনী দু’টি দিয়ে মুখের পেশি এবং মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ হয়। কোলেস্টেরল জাতীয় উপাদান জমে ‘প্লাক’ তৈরি হয়ে এই ক্যারোটিড ধমনী সঙ্কুচিত হতে পারে। ধমনীর এই সঙ্কোচনকে ‘স্টেনোসিস’ বলা হয় এবং এই সংকোচন প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা খুব কঠিন। অভ্যন্তরীণ ক্যারোটিড সংকোচনের ফলে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রয়োজনীয় রক্ত ছাড়া, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব হয় এবং রোগীর স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সাধারণ ভাবে ধরা হয়, ব্যায়ামের মাধ্যমে হৃৎস্পন্দনের মাত্রা বাড়ালে ধমনীতে কোলেস্টরেল প্লাক তৈরির সম্ভাবনা কমে। কিন্তু আইআইটি খড়গপুরের গবেষকেরা সাম্প্রতিক এই গবেষণায় দেখেছেন, ধমনীতে যদি আগের থেকেই অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেনোসিসজনিত সঙ্কোচন থাকে, উচ্চতর হৃৎস্পন্দন স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, সুস্থ রোগী বা যাঁদের ধমনী অল্প অবরুদ্ধ, ব্যায়াম তাঁদের ক্ষেত্রে স্টেনোসিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর হয়। সেই সব ক্ষেত্রে উচ্চতর হৃৎস্পন্দন ধমনীর দেওয়ালে ঘর্ষণজনিত চাপের তুলনামূলক নিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ঘটায় যা ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে দেয় না।

Advertisement

কিন্তু, ইতিমধ্যেই স্টেনোসিসের সম্মুখীন রোগীদের জন্য, এটি ততটা উপকারী নাও হতে পারে। গবেষকেরা কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ক্যারোটিড ধমনীতে বিভিন্ন মাত্রার স্টেনোসিস মডেল করেছেন এবং তার উপরে বিভিন্ন হৃৎস্পন্দনের ফলাফল পরীক্ষা করেছেন।

অন্যতম গবেষক সোমনাথ জানালেন, তাঁদের নিরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মাঝারি বা উচ্চতর স্টেনোসিসের রোগীর ক্ষেত্রে অত্যন্ত জোরদার ব্যায়াম, (১২০ বা তার বেশি হার্ট রেট) বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। হৃৎস্পন্দনের অধিকতর মাত্রায় সেই সব রোগীর ক্ষেত্রে স্টেনোসিসের উপরে চাপ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে প্লাক ভেঙে রক্ত ছোট ছোট আকারে জমাট বাঁধার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। এই ছোট জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কে প্রবাহিত হয়ে মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে, এবং এর ফলে ইস্কিমিক স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। এর পাশাপাশি উচ্চ হৃৎস্পন্দনের ফলে ধমনীর দেওয়ালে ঘর্ষণ জনিত চাপের মাত্রার যে ওঠা-নামা দেখা যায় তা আর একটি স্টেনোসিস গঠনের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement