উচ্ছ্বাস: অফলাইন পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলন সফল। হাসি ফুটল আন্দোলনকারীদের মুখে। সোমবার সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
আন্দোলনকারীদের মধ্য স্পষ্টতই দু’টি ভাগ। এক দল পড়ুয়া চান অফলাইনে পরীক্ষা, অন্য দলের দাবি অনলাইন। সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবারের বৈঠকে অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তেই স্থির থাকেন। অফলাইনপন্থী পড়ুয়ারা এটাকে তাঁদের নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছেন। আর অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বেলা ৩টেয় উপাচার্যকে ফের ঘেরাও করেন। সেই ঘেরাও চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। পড়ুয়া শিবিরের মতো উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যেও দু’টি ভাগ হয়ে গিয়েছে। একাংশ চাইছেন, কিছু কোর পেপারের পরীক্ষা অনলাইনে হোক। তবে অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগের মতো ‘কোর’ ও থিয়োরি পেপারগুলির পরীক্ষা হবে অফলাইনেই। অন্য কিছু পেপার কোন মোডে নেওয়া হবে, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। তবে পড়ুয়াদের সুবিধার্থে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা পিছিয়ে ১৪ জুন শুরু হবে। বাকি ইভ্ন সিমেস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে ২৮ জুন।
অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে গত শুক্রবারেও উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায়কে ঘেরাও করা হয়েছিল। পরে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, সোমবার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকে কথা হবে। এ দিনের বৈঠকে মত প্রকাশ করা হয় অফলাইনের অনুকূলেই।
অনলাইনের দাবিতে কিছু পড়ুয়া বিক্ষোভ শুরু করেন। অফলাইনে পরীক্ষার দাবি জানান পড়ুয়াদের একাংশ। দু’পক্ষই কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখান। অফলাইনপন্থীরা উপাচার্যের কাছে লিখিত দাবি জানান। অফলাইনের পক্ষে দর্শন বিভাগের ষষ্ঠ সিমেস্টারের ছাত্র অনিমেষ দত্ত বলেন, ‘‘অনলাইন পরীক্ষা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এই পদ্ধতিতে কেউ বই বা নোটস দেখে লিখছে কি না, তা বোঝার উপায় নেই। এতে প্রকৃত মূল্যায়ন হয় না।’’ অফলাইনে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক ইংরেজির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অভীপ্সা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের দাবি ন্যায্য ছিল। অফলাইনে পরীক্ষা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত আমাদের নৈতিক জয়।’’ আর অনলাইনে পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সংস্কৃত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কপর্দী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঠিক ভাবে ক্লাস হয়নি। ঠিক ভাবে স্টাডি মেটেরিয়াল দেওয়া হয়নি। পড়াশোনার সময়ও কম পেয়েছি। তাই আমরা চাই, এ বার পরীক্ষা হোক অনলাইনেই।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।