Sovan Chatterjee and Ratna Chatterjee divorce case

বিবাহবিচ্ছেদ মামলার ফাঁকে আদালত চত্বরে তীব্র বচসা বেধে গেল শোভন-রত্নার, অদূরে সাক্ষী রইলেন বৈশাখী

বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় শনিবার আদালতে হাজির হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অন্য দিকে, ওই মামলার শুনানিতে অংশ নিতে এসেছিলেন রত্নাও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ১৯:১৩
Share:

রত্না চট্টোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

আবার প্রকাশ্যে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন শোভন চট্টোপাধ্যায় আর রত্না চট্টোপাধ্যায়। এ বারও আদালত চত্বরে। শনিবার বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় আলিপুর আদালতে হাজির হয়েছিলেন শোভন। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, ওই মামলার শুনানিতে অংশ নিতে এসেছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। সেখানেই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে একে অপরের সঙ্গে তীব্র বচসায় জড়িয়ে পড়েন শোভন-রত্না। ওই সময় শোভনের সঙ্গেই ছিলেন বৈশাখী। তিনি অবশ্য ওই দু’জনের ঝগড়ার সময় নীরব ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। এই ঘটনার একাধিক ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সেই সব ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।

Advertisement

প্রতক্ষদর্শীদের দাবি, শোভন-রত্নার কথোপকথন প্রথমে নরম স্বরেই চলছিল। অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগ থেকে আচমকাই তা ঝগড়ায় গড়ায়। তার পর সেই ঝগড়া পৌঁছয় উচ্চস্বরে চিৎকারে। পরস্পরকে আক্রমণ করতে থাকেন তাঁরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, শোভন অভিযোগ করেন, তাঁর অনেক কিছু এখনও দখল করে রেখেছেন রত্না ও তাঁর পরিবার। পাল্টা রত্নাকেও বলতে শোনেন তাঁরা, বর্তমানে গোলপার্কের যে আবাসনে শোভন রয়েছেন, সেটি এখনও শুভাশিস দাসের নামেই রয়েছে। শুভাশিস সম্পর্কে রত্নার ভাই হন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত নানা বিষয়েই শোভন-রত্না পরস্পরকে আক্রমণ করেছেন বলে প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি। গোটা ঘটনার সাক্ষী ছিলেন বৈশাখী।

দু’জনের চিৎকার-চেঁচামেচি আরও বাড়তেই এগিয়ে আসেন শোভনের নিরাপত্তারক্ষীরা। রত্নাকেও থামতে বলেন তাঁর আইনজীবী ও অনুগামীরা। কিন্তু কেউই তখন থামতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। প্রায় মিনিট ১৫ সেই ঝগড়া চলার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে দু’পক্ষকেই সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত চত্বরে শোভন-রত্নার ঝগড়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। কিন্তু শনিবারের ঘটনা যেন অন্য সব বারকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। পরে আদালতের কাজকর্ম শেষ করে শোভনের সঙ্গে আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যান বৈশাখী। অন্য দিকে, নিজের অনুগামীদের নিয়ে বেহালার পথ ধরেন রত্নাও।

Advertisement

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক আইনজীবী জানিয়েছেন, ওই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল পুলিশের তরফে। অনেক অনুরোধ করেও থামানো যাচ্ছিল না শোভন-রত্নাকে। শেষমেশ দু’পক্ষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই বিষয়ে জানতে রত্নার মোবাইলে ফোন করা হয় আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। তবে তিনি ফোন ধরেননি। ফোন করা হয়েছি বৈশাখীর মোবাইলেও। সেটিও বেজে গিয়েছে।

২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে নিজের বেহালার পর্ণশ্রী এলাকার বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন কলকাতার তৎকালীন মেয়র শোভন। গিয়ে উঠেছিলেন গোলপার্কের একটি বিলাসবহুল আবাসনে (আবাসনের ওই ঘরটি তাঁর ভাইয়ের বলে দাবি করেন রত্না)। সেই থেকেই পরিবার থেকে দূরে শোভন। মাঝে বিজেপিতে যোগদান করে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন শোভন। তাঁর সঙ্গে বৈশাখীও। এক বার ভাইফোঁটায় কালীঘাটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ফোঁটাও নিয়ে এসেছেন তাঁরা। কিন্তু তাতেও প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন হয়নি শোভনের।

অন্য দিকে, শোভনের অবর্তমানে দলের অনেক দায়িত্ব রত্নাকে অর্পণ করেছেন মমতা। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি, রত্না বর্তমানে বেহালা পূর্বের বিধায়কও। ওই ওয়ার্ড থেকে জিতেই কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন শোভন। আর বেহালা পূর্ব থেকে জিতে হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। এমন সব ঘটনার জেরে শোভন-রত্নারও দূরত্বও ক্রমশ বেড়েছে। বর্তমানে বেড়েছে তিক্ততাও। শনিবার দুপুরে সেই তিক্ততার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলেই মনে করছেন প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement