কলকাতা হাই কোর্ট ফাইল চিত্র
উচ্চ প্রাথমিকে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া নিয়ে এ বার কলকাতা হাই কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ইন্টারভিউতে কমিশনের ভূমিকা ‘সন্তোষজনক’ নয় বলে জানাল আদালত। উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ, আইনি দিক থেকে সবার সমান অধিকার রয়েছে, এই নিয়ম কমিশন মেনে চলেনি। তবে মানবিক কারণেই ‘ব্যতিক্রমী’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে কমিশনের মত।
বার বার আইনি জটের কারণে দীর্ঘ দিন থমকে যায় উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া। অবশেষে গত মাসে ইন্টারভিউতে ছাড়পত্র দেয় উচ্চ আদালত। সেই মতো ইন্টারভিউ শুরু করে এসএসসি। কিন্তু মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েক জন প্রার্থী ডাক পাননি ইন্টারভিউতে। কারণ হিসেবে কমিশন জানায়, নথি ঘেঁটে দেখা গিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত আছেন। তাই তাঁদেরকে আর উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। পরিবর্তে ওই স্থানে বেকারদের সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ বেকারদের আগে সুযোগ দিতে বর্তমান চাকুরিজীবী প্রার্থীদের ডাকেনি কমিশন। এই মর্মে ৯ জন চাকরিরতকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। আলমগির রহমান-সহ ৮ জন টেট উত্তীর্ণ প্রার্থী এসএসসি-র ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করেন।
ওই মামলার রায়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, ‘‘নিয়োগে মেধাই শেষ কথা। সকার (চাকুরে) বা বেকারের মধ্যে পার্থক্য হবে কেন। যোগ্যতার ভিত্তিতেই সবাইকে ইন্টারভিউতে ডাকতে হবে।’’
অন্য দিকে, বুধবার উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউয়ের শেষ দিন। আদালতের নির্দেশ, ওই দিন তাঁদেরও ইন্টারভিউ নিতে হবে। এ নিয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকের যখন পরীক্ষা হয়, তখন তাঁরা চাকরিরত ছিলেন না। বেকার ছিলেন। পরবর্তী কালে তাঁরা সরকারি চাকরি পেয়েছেন। সেই যুক্তি দেখিয়ে তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছিল না। আদালতের নির্দেশে সেই বাধা আর রইল না।’’
এসএসসি-র পক্ষের আইনজীবী জানান, বেকারদের প্রাধান্য দিয়ে কমিশন একটি ‘মানবিক’ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তাতে যে হেতু সমস্যা রয়েছে, তাই আদালতের নির্দেশ মতো কাজ করবে কমিশন।