মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
সবার উপরেই কড়া নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সবাই বলতে কোচবিহার জেলা তৃণমূলের বিধায়ক-মন্ত্রী থেকে চেয়ারম্যান। দল সূত্রেই খবর, লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পরেও দ্বন্দ্ব কমেনি জেলা তৃণমূলে। অনেককেই এলাকায় দেখা যায় না। তা নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন তিনি। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে উত্তরকন্যার প্রশাসনিক সভায় মেখলিগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধানকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেছেন, কেন সন্ধের পরে এলাকায় দেখা যায় না তাঁকে। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহকেও জিজ্ঞেস করেন, কেন এলাকায় পথবাতি জ্বলে না। দলনেত্রী এমন খোঁজখবর রাখছেন জেনে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে জেলা তৃণমূলে। দল সূত্রের খবর, নেত্রী আরও কয়েকজনকে আলাদা ভাবে সতর্ক করেছেন। কেউই অবশ্য তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। এক নেতা বলেন, “এটা স্পষ্ট, কে কী করছেন সে খোঁজ দিদির কাছে রয়েছে। সেই হিসেবে ব্যবস্থা নিলে খুশি হব।”
কোচবিহার তৃণমূলের গড় বলেই আট বছর ধরে পরিচিত। জেলার ৯ টি বিধানসভার মধ্যে ৮ টি তৃণমূলের। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত রাজ্যের শাসকদলের দখলে। জেলার সব ক’টি পুরসভাও তৃণমূলের দখলে রয়েছে। সেই গড়ে থাবা বসিয়ে লোকসভার আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। তার পর থেকেই ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে তৃণমূলের সংগঠন। পরিস্থিতি সামলাতে জেলা সভাপতির পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে দিয়ে বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেলার কার্যকরী সভাপতি করা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে। তার পরেও যে খুব একটা অবস্থা পাল্টেছে তা নয়। পুরসভার নির্বাচনও আর দেরি নেই। লোকসভার নিরিখে কোচবিহারে সবকয়টি পুরসভাতেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সে কারণে বিধানসভা ভিত্তিক বিধায়কদের মাথায় রেখেই একটি কমিটি তৈরি করে কাজের নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোন বিধায়ক ও তাঁর কমিটি কী কাজ করছেন তার তদারকি করা হচ্ছে রাজ্য থেকে। বিধানসভা ভিত্তিক ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি থেকেও দলনেত্রী প্রত্যেকের কাজকর্ম জানতে পাচ্ছেন। ওইদিন অর্ঘ্যকেনেত্রী বলেন, “তরুণ বয়স তোমার। তোমার তো এখন ছুটে বেড়ানোর কথা। কিন্তু এলাকায় তোমাকে দেখা যাচ্ছে না।” সেখানেই তিনি জানান, বিশেষ করে সন্ধ্যের পরে দেখা যাচ্ছে না। ওই বিধায়ক অবশ্য সেখানেই দাবি করেন, তিনি সব জায়গায় ছুটছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “সবার দিকেই নজর রয়েছে দিদি’র। তাই কাজ না করে কেউ পার পাবে না।”