West Bengal Panchayat Election 2023

ভোট-সন্ত্রাসে ছেলের মৃত্যু, তবু ব্যালটেই মত প্রকাশ মায়ের

ভোটের আগে, গত মঙ্গলবার রাতে সোহাই শেবপুর পঞ্চায়েতের গাঙাটি গ্রামে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল বছর সতেরোর কিশোর ইমরান হোসেনের। বাবাকে ডাকতে গিয়ে ফেরার পথে তাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ ০৬:২৪
Share:

বাড়িতে ইমরানের বাবা, মা ও দাদা। শনিবার।  নিজস্ব চিত্র।

এ বারের নির্বাচনে সন্ত্রাসের বলি হয়েছে তাঁর সতেরো বছরের ছেলে। সেই নির্বাচনেই দিনের শেষে নিজের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করে এলেন মা।

Advertisement

তার আগে শনিবার সারা দিনই অবশ্য মৃত কিশোর ইমরানের মা মমতাজ বেগম ছিলেন কার্যত ঘরবন্দি। তাঁদের টিনের ছাউনির ছোট্ট ঘরে ছিল শ্মশানের নিস্তব্ধতা। দেগঙ্গা নির্বাচন ঘিরে দিনভর উত্তপ্ত থাকলেও তার কোনও রেশ যেন ঢুকতে পারেনি ইটের দেওয়াল ভেদ করে। ঘরে ঢুকে দেখা গেল, ছোট্ট চৌকিতে গুটিসুটি মেরে শুয়ে রয়েছেন মমতাজ। বললেন, ‘‘ও তো ভোটারই হয়নি। প্রচারেও কোনও দিন যেত না। প্রচারে গিয়ে বাবা ফিরছে না দেখে রাতে ডাকতে গিয়েছিল। ওর মৃত্যুর দায় কার?’’ ভোট দিতে যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও শেষ বেলায় অবশ্য নিজের মতামত প্রকাশের জন্য ব্যালট বাক্সকেই বেছে নিলেন তিনি।

ভোটের আগে, গত মঙ্গলবার রাতে সোহাই শেবপুর পঞ্চায়েতের গাঙাটি গ্রামে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল বছর সতেরোর কিশোর ইমরান হোসেনের। প্রচারে বেরোনো বাবাকে ডাকতে গিয়ে ফেরার পথে তাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল কর্মী বাবার সামনেই কার্যত মৃত্যু হয় ওই কিশোরের। এই ঘটনার পরেই গোটা গ্রাম কার্যত বিরোধীশূন্য বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। যে দু’-এক জন ‘বিরোধী’ গ্রামে রয়ে গিয়েছেন, তাঁরা কেউ ঘর থেকে বেরোননি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এমনকি, এ দিন গ্রামের বুথেও ছিলেন না বিরোধী দলের কোনও এজেন্ট।

Advertisement

সকালে ভোট দিতে গিয়েছিলেন মৃতের বাবা এমদাদুল হক। কয়েক জন প্রতিবেশী এসে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি। এমদাদুল বলেন, ‘‘আমি এজেন্ট ছিলাম। তাই ওরা ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বেশি ক্ষণ থাকতে পারিনি। আর যাব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement