West Bengal Panchyat Election 2023

‘পদ গেলে আপত্তি করব না’, পঞ্চায়েত ভোটে দলের জয়ী প্রার্থীদের ঘোষণাপত্রে সই করিয়ে নিচ্ছে শাসকদল

পঞ্চায়েত ভোটের ফলঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠন করা নিয়ে শাসকদলের ব্যস্ততা চলছিল। তার মধ্যেই জয়ী প্রার্থীদের এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করানোর কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৫২
Share:

ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে জয়ী জনপ্রতিনিধিদের থেকে ঘোষণাপত্রে সই নিচ্ছে তৃণমূল। ছবি: সংগৃহীত।

পদ চলে গেলেও আপত্তি থাকবে না। এমনকি, তাঁদের আনা অভিযোগও আইন-আদালতে গ্রাহ্য হবে না। এই মর্মে পঞ্চায়েত ভোটে দলের জয়ী জনপ্রতিনিধিদের থেকে ঘোষণাপত্রে সই নিচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠন করা নিয়ে শাসকদলের ব্যস্ততা চলছিল। তার মধ্যেই জয়ী প্রার্থীদের এই ঘোষণাপত্রে সই করানোর কাজ শুরু হয়েছে। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, নামে ঘোষণাপত্র বলা হলেও, আসলে এটি রাজনৈতিক মুচলেকাই।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, কোনও পঞ্চায়েত প্রধান কাজ না করলে বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে তাঁকে তিন মাসের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হবে। বিভিন্ন জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত গঠনের সঙ্গে সঙ্গেই ঘোষণাপত্রে সই করানো হচ্ছে। ওই ঘোষণাপত্রে লেখা হয়েছে, ‘‘জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সদস্য/সদস্যা হিসেবে আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমি এই অঙ্গীকার করছি যে, পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজ রূপায়ণে তৃণমূলের দলনেতার নির্দেশ মতো সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব এবং দলের অনুগত সৈনিক হিসেবে কাজ করব।’’

ঘোষণাপত্রের শেষাংশে লেখা হয়েছে, ‘‘আমাকে অযোগ্য বিবেচনার জন্য এবং সদস্যপদ বিলোপের জন্য দলনেতা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমার কোনও আপত্তি থাকবে না বা আমার কোনও অভিযোগ আইন-আদালতে গ্রাহ্য হবে না।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের এমন ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূল যে নির্দেশ জারি করেছে, তা পঞ্চায়েত সদস্যদের প্রতি। এ ক্ষেত্রে বিষয়টিকে নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব করে দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বলেই আমি মনে করি।’’

Advertisement

তবে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, যে কোনও দুর্নীতির অভিযোগের দায় নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। তাই শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে ইডির হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারির অব্যবহিত পরেই তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে ভাবে নিচুতলার দুর্নীতিকে কড়া হাতে দমন করতেই এই ঘোষণাপত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও পঞ্চায়েত পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলেই যাতে দল ব্যবস্থা নিতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ঘোষণাপত্র নিয়ে দলের নিচুতলা থেকে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। লোকসভা ভোটের আগেই দলের নেতাদের এই ঘোষণাপত্র মারফত দলের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানও স্পষ্ট করা লক্ষ্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement