প্রতীকী ছবি।
শান্তিপুরের সাম্প্রতিক বিষমদ-কাণ্ডে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিষমদের ‘বিষ’ নিয়ন্ত্রণে নামছে রাজ্য সরকার।
চোলাই মদের বিষক্রিয়ায় পাওয়া মিথাইল অ্যালকোহল বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিরিটকে ‘বিষ’ হিসেবে ঘোষণা করতে চলেছে রাজ্যের আবগারি দফতর। তার ফলে বাজারে মিথাইল অ্যালকোহল বিক্রির জন্য সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। যে-কেউ খোলা বাজারে বাজারচলতি স্পিরিট বিক্রি করতে পারবেন না। দফতরের যুক্তি, বিক্রি ও ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা গেলে চোলাইয়ের কারবারিদের হাতে সহজে মিথাইল অ্যালকোহল পৌঁছবে না। পাশাপাশি ‘বিষ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হয়ে গেলে কঠোরতম ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা সম্ভব হবে। যাতে তাদের দৃষ্টাম্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায়।
কী ভাবে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে? আবগারি দফতর জানাচ্ছে, ১৯১৯ সালের ইন্ডিয়ান পয়জন অ্যাক্ট অনুসারে রাজ্যের হাতে সেই ক্ষমতা আছে। সেই আইনের আওতায় আনা হবে মিথাইল অ্যালকোহলকে। বাজারি স্পিরিট বিষের তালিকায় চলে এলে লাইসেন্স ছাড়া কেউ তা বিক্রি বা বহন করতে পারবে না। বাজারে বিক্রি নিয়ন্ত্রিত হলেই ব্যবহারও নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আশা করেছেন আবগারি কর্তারা।
চোলাই মদের বিষক্রিয়ার রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে যে-বিষাক্ত যৌগের প্রমাণ মিলছে, সেটি হল মিথাইল অ্যালকোহল। আবগারি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে হাতুড়ে পদ্ধতিতে চোলাই বানানোর সময় তাপমাত্রার তারতম্যের জন্য ইথাইল অ্যালকোহল মিথাইল অ্যালকোহলে পরিণত হয়ে যায়। ফলে মদে যে বিষক্রিয়া হয়েছে, তা বোঝাই যায় না। কিন্তু ইদানীং কয়েকটি ক্ষেত্রে চোলাইয়ের নমুনায় যে-পরিমাণ মিথাইল অ্যালকোহল পাওয়া যাচ্ছে, তা বাইরে থেকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেই মনে করছেন আবগারি কর্তারা। সেই কারণেই বাজারি স্পিরিট বিক্রি নিয়ন্ত্রণের ভাবনাচিন্তা চলছে।
বাজারি স্পিরিট রং শিল্পে ব্যবহৃত হয় এবং গৃহস্থের নানান কাজে লাগে বলে বাড়িতেও থাকে। বিষ ঘোষণার পরে লাইসেন্স ছাড়া তার বিক্রি বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।