কলকাতার বায়ুদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে তিরস্কৃত হল রাজ্য। একাধিক বার শুনানিতে গরহাজির থাকার জন্য সোমবার অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। অবিলম্বে কলকাতায় ‘হট মিক্স’ প্ল্যান্ট বন্ধ করতে নির্দেশও দিয়েছেন পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য নাগিন নন্দের ডিভিশন বেঞ্চ।
আগামী ২২ অক্টোবর বায়ুদূষণ সংক্রান্ত যাবতীয় নির্দেশ কার্যকর করার ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। সময়সীমার মধ্যে ওই রিপোর্ট আদালতে জমা না করলে নির্দেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ আধিকারিকদের বেতন বন্ধ-সহ কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পরিবেশ আদালত।
সাম্প্রতিক কালে বায়ুদূষণের নিরিখে কলকাতা বারবারই প্রথম সারিতে উঠে এসেছে। মারাত্মক দূষণের জেরে জনস্বাস্থ্যের উপরে কুপ্রভাব পড়বে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এই সব তথ্য নিয়েই জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলায় আদালতের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটি একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছিল। তার ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ১১ অগস্ট রাজ্য সরকারকে কয়েক দফা নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। সুভাষবাবু জানাচ্ছেন, ওই নির্দেশের বেশির ভাগই এখনও কার্যকর করা হয়নি। এ নিয়ে আদালত বারবার সতর্ক করেছিল। অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বারবার আদালতে হাজির থাকতে বলা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। তাতেই ক্ষুব্ধ আদালত এ দিন জরিমানার নির্দেশ দেয়। জরিমানার অর্ধেক আবেদনকারী হিসেবে পাবেন সুভাষবাবু।
রাস্তা সারাই করার ‘হট মিক্স’ প্ল্যান্ট যে দূষণের অন্যতম উৎস, তা বলা হয়েছিল বায়ুদূষণ সংক্রান্ত রিপোর্টেই। তা নিয়ে শুনানির পর সম্প্রতি ‘হট মিক্স’ প্ল্যান্ট বন্ধ করতে বলেছিল আদালত। সুভাষবাবু জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে পরিবেশ আদালতের নির্দেশেই দিল্লি শহরে ‘হট মিক্স’ প্ল্যান্ট বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত তা মানা হয়নি।
‘হট মিক্স’ প্ল্যান্ট বন্ধ করার ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে বলেন, ‘‘রায়ের কথা শুনেছি। তবে প্রতিলিপি এখনও দেখিনি। দু’-এক দিনের মধ্যে আদালতে আমাদের আর্জি জানাব।’’
পুরকর্তাদের অবশ্য দাবি, প্রকাশ্যে নয়, কারখানার ভিতরে হটমিক্স তৈরি করা হয়। তাই পরিবেশ দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।