SSC

SSC Recruitment: এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে দোসর হতে চলেছে ইডি, নজর নিয়োগের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগে

ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি-তে স্কুল শিক্ষক, গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫৯
Share:

বিষয়টি ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে ফাইল চিত্র।

রাজ্যে স্কুলে নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে কি না, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সেই বিষয়টি ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ বার তদন্তে নামতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ইডি)।

Advertisement

সাধারণত কোথাও বড় অঙ্কের টাকা নয়ছয়ের ইঙ্গিত মিললে, সেখানে সিবিআইয়ের সঙ্গে তদন্তে নামে ইডি। এ রাজ্যেই যেমন এর আগে সারদা, রোজ় ভ্যালি, নারদ এবং গরু-কয়লা পাচারের তদন্তে নেমেছে তারা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) সংক্রান্ত যাবতীয় মামলাও।

ইডি সূত্রে খবর, এসএসসি-তে স্কুল শিক্ষক, গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সব মামলা সংক্রান্ত নথি নিয়েই এ বার নিজেদের মামলা দায়ের করতে চলেছে ইডি। এই নিয়োগ ঘিরে যে টাকা হাতবদলের অভিযোগ উঠেছে, তা কোথা থেকে এল, তার অঙ্ক কত, এবং শেষ পর্যন্ত তা কোথায় আর কাদের হাতে পৌঁছেছে, মূলত সেটিই খতিয়ে দেখার কথা ইডি-র।

Advertisement

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে স্কুলে নিয়োগের মামলায় তদন্তে নেমেছে সিবিআই। আদালতের আঙিনায় বিষয়টি এত দূর গড়িয়েছে যে, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা পর্যন্ত দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বলেছিলেন, পার্থ তদন্তে সহায়তা না করলে, তাঁকে হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই। আপাতত সেই নির্দেশের উপরে পাঁচ সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে এ বার স্কুলে নিয়োগ নিয়ে সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে উদ্যোগী হয়েছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির সদর দফতরের নির্দেশে কলকাতার পূর্বাঞ্চলীয় অফিসে ‘এনফোর্সমেন্ট কেস ইনভেস্টিগেশন’ নথিভুক্ত করে তদন্তের প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে।

ইডি সূত্রের খবর, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুলে নিয়োগ নিয়ে একাধিক মামলায় এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। পাশাপাশি, এ বিষয়ে প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টও আদালতে জমা পড়েছে। সিবিআইয়ের এফআইআরের পাশাপাশি বিচারপতি বাগ কমিটির অনুসন্ধান রিপোর্টে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতেও তদন্ত হবে বলে জানাচ্ছেন ইডি কর্তারা।

ইডি-র তদন্তকারীদের কথায়, তাঁদের তদন্তের ক্ষেত্রে কোনও আইনি বাধা নেই। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা মামলায় ‘প্রভাবশালী’ যোগসাজশে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক সুকান্ত আচার্য-সহ কমিশনের

একাধিক কর্তাকে প্রাথমিক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। ইডি-র তদন্তকারীদের দাবি, নিয়োগে দুর্নীতি কবে থেকে হয়েছে, কত টাকার হাতবদল সেই সূত্রে হয়ে থাকতে পারে, এবং প্রশাসনের কোন স্তর পর্যন্ত তাতে যুক্ত, সেই বিষয়টি বিশদে খতিয়ে দেখবে তারা। ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের এফআইআরের প্রতিলিপি সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।

কোনও বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ক্ষেত্রে, ফৌজদারি অপরাধের দিকটি সিবিআই দেখলেও, আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি সাধারণত তদন্ত করে ইডি। তারা আর্থিক নয়ছয় বিরোধী আইনে (পিএমএলএ) মামলা দায়ের করে। এ রাজ্যে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদা ও রোজ় ভ্যালির তদন্ত ২০১৪ সালে সিবিআই শুরু করার পরে ইডি তদন্তে নামে। ইডি-র হাতেই গ্রেফতার হন রোজ় ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। তদন্তকারীদের দাবি, নারদ ঘুষ মামলার তদন্তেও মূল ভূমিকা নিয়েছে ইডি। সেখানে হিসাব বহির্ভূত আয়ের মামলা দায়ের করা হতে পারে বলেও ইডি সূত্রের খবর। স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রেও হিসাব বহির্ভূত আয়ের মামলা দায়ের করা প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

কয়লা ও গরু পাচার মামলাতেও গুকুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ইডি-র। এ ক্ষেত্রেও কোটি কোটি টাকা হাতবদলের অভিযোগ উঠেছে। কোথা থেকে এত টাকা এল, সেই টাকা কোথায় গেল, তার কোনও অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে কি না, মূলত এগুলিই খতিয়ে দেখছে তারা। তদন্তকারীদের দাবি, স্কুলে নিয়োগেও এ বার একই খোঁজে নামছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement