—ফাইল চিত্র।
শিক্ষকতাকে শুধু ক্লাসঘরের চার দেওয়ালে আটকে রাখেননি তিনি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার উন্নয়নে আক্ষরিক অর্থেই ‘মাস্টারমশাই’-এর ভূমিকা নিয়েছিলেন। বিদ্যার দেবীর আরাধনার দিনেই প্রয়াত হলেন সেই মাস্টারমশাই তথা সুন্দরবনের রাঙাবেলিয়ার উন্নয়নের কান্ডারি তুষার কাঞ্জিলাল। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
১৯৩৫ সালের মার্চে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের নোয়াখালিতে তুষারবাবুর জন্ম। ১৯৪৬ সালে দাঙ্গার সময় চলে আসেন হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় বাবার কর্মস্থলে। অল্প বয়সেই মার্ক্সবাদী দর্শনের দিকে আকৃষ্ট হন। সেই কারণে নানা সময় পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া মাঝপথে থামিয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। উদ্বাস্তু, খাদ্য আন্দোলনে নেমে বেশ কয়েকবার কারাবাসও করতে হয় তাঁকে। ’৬৭ সালে আদর্শগত কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। স্কুল শিক্ষকের চাকরি নিয়ে থিতু হন সুন্দরবনের গোসাবার রাঙাবেলিয়ায়।
সেই আমলে রাঙাবেলিয়া ছিল উন্নয়নের একেবারে প্রান্তিক স্তরে। সেখানে সমাজ ও অর্থনীতির উন্নয়নের কাজ শুরু করেন তুষারবাবু। পরবর্তী কালে গড়ে তোলেন টেগোর সোসাইটি ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট। তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন পদ্মশ্রী-সহ একাধিক পুরস্কার। মাটির সঙ্গে তাঁর যোগ ছিল আমৃত্যু। তুষারবাবুর মৃত্যুতে অনেকটাই যেন অভিভাবকহীন হয়ে গেল রাঙাবেলিয়া।
আরও পড়ুন: ফি সপ্তাহে সুন্দরবন, ৬৭ বছরেও ছুটে চলেছেন বিরাটির ‘দু’টাকার ডাক্তার’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন শোকবার্তায় বলেছেন, ‘‘বিশিষ্ট সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ, লেখক ও শিক্ষাবিদ তুষার কাঞ্জিলালের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে তিনি দীর্ঘদিন নিরলস কাজ করে গিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে সমাজসেবার ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হল।’’