টিয়ারঙের দ্বীপ ছাড়িয়ে চলে গেলেন রমাপদ চৌধুরী, বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৬

রবিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৮
Share:

সাহিত্যিক রমাপদ চৌধুরী (১৯২২-২০১৮)।

‘বনপলাশীর পদাবলী’র কথাকার রমাপদ চৌধুরী বাড়ি বদলে নিলেন।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক। বয়স হয়েছিল প্রায় ৯৬ বছর। ২০ জুলাই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এ দিন হৃদ্‌যন্ত্র বিকল হয়ে যায় তাঁর। রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে, জামাই, নাতনিরা। তাঁর বড় মেয়ে মহুয়া সামন্ত জানান, রাতে হাসপাতালেই মরদেহ রাখা হয়েছে। আজ, সোমবার দুপুরে কেওড়াতলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

মহুয়াদেবী জানান, মাস দুয়েক ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তাঁর বাবা। শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়ার পরে, গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালেই হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আইটিইউয়ে রাখা হয়েছিল তাঁকে।

Advertisement

আরও পড়ুন: গল্প কী করে লিখতে হয়, শিখেছি ওঁর লেখা পড়ে

রমাপদ চৌধুরীর জন্ম ১৯২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর, খড়্গপুরে। স্কুলের পাঠ সেখানেই। তার পরে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। ইংরেজি সাহিত্যে এমএ পাশ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। শিক্ষা শেষে যোগ দেন আনন্দবাজার পত্রিকায়। অ্যাসোসিয়েট এডিটর হিসেবে এই পত্রিকার ‘রবিবাসরীয়’ সম্পাদনা করেছেন দীর্ঘদিন।

রমাপদবাবুর প্রথম উপন্যাস ‘প্রথম প্রহর’। তাঁর স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত উপন্যাস ‘বনপলাশীর পদাবলী’ ১৯৬০ সালে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয় ‘দেশ’ পত্রিকায়। পরে সেই কাহিনিকে রুপোলি পর্দায় রূপ দেন স্বয়ং উত্তমকুমার। তাঁর লেখা ‘অভিমন্যু’ নিয়ে তপন সিংহ তৈরি করেন স্মরণীয় ছবি ‘এক ডক্টর কি মওত’। ‘খারিজ’ নিয়ে ছবি করেছেন মৃণাল সেন। ‘এক দিন অচানক’ ছবিটিও রমাপদবাবুর ‘বীজ’ উপন্যাসের ভিত্তিতে। রমাপদবাবুর অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে ‘এই পৃথিবী পান্থনিবাস’, ‘যে যেখানে দাঁড়িয়ে’, ‘দ্বীপের নাম টিয়া রং’, ‘এখনই’, ‘বাড়ি বদলে যায়’, ‘হারানো খাতা’ এবং ‘লালবাঈ’। বিভূতিভূষণ, তারাশঙ্কর, মানিক— তিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে যাঁরা বাংলা কথাসাহিত্যের সমৃদ্ধ ধারা বহমান রাখার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, রমাপদবাবু তাঁদের প্রতিনিধিস্থানীয়। শুধু উপন্যাস নয়, ছোট গল্পেরও অবিস্মরণীয় এই শিল্পী পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। ইংরেজি ও হিন্দিতে অনূদিত হয়েছে তাঁর বহু রচনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement