কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নজরে এ বার বহুতলের গ্যারাজ, কমিউনিটি হল কিংবা ক্লাবও! না, বেআইনি কার্যকলাপ রুখতে নয়। ওই সব জায়গায় বুথ করতে চাইছে কমিশন। আর সঙ্গে প্রয়োজনভিত্তিক বুথে ভোটারদের যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে চলেছে তারা।
দেশের বিভিন্ন শহর বা উপনগরী ক্রমেই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলাচ্ছে। আর তাতে আবাসন স্থানের সঙ্গে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের দূরত্ব বাড়ছে। সেই জন্য ভোটারদের সুবিধামতো বুথ তৈরি নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কমিশনকে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে সেই সমস্যা মেটানোই যে তাঁদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ, তা মানছেন কমিশনের আধিকারিকেরা। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শহর বা উপনগরীতে ভোটারদের জন্য সুবিধাজনক বুথ পাওয়ার সমস্যা আছে। অনেকেই বাড়ি থেকে দূরে ভোট দিতে যেতে চান না। সেখানে ভোটারদের সুবিধামতো বুথ করা আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ তো বটেই।’’
এই অবস্থায় বুথ তৈরির জন্য বহুতলের পরিচালন সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। সেই তালিকায় রয়েছে কমিউনিটি হল, ক্লাবও। এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘তাঁদের গ্যারাজটি ভোটের সময়ে কয়েক দিন যাতে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ করা হচ্ছে বিভিন্ন বহুতলের পরিচালন সমিতিকে। একই ভাবে ক্লাবগুলিকেও অনুরোধ করা হচ্ছে।’’ কলকাতা, হাওড়া, বিধাননগর, নিউ টাউনে এই ধরনের বুথ খুঁজতে গিয়ে নাজেহাল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারেরর দফতর। পরিস্থিতি বদলাবে, আশাবাদী দফতরের আধিকারিকেরা।
কয়েক বছর আগে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বুথ এমন ভাবে তৈরি হবে, যেখানে ন্যূনতম পরিষেবা (বিএমএফ) পাবেন ভোটার। সেই লক্ষ্যে অনেকটাই এগোনো গিয়েছে বলে কমিশনের কর্তাদের দাবি।
শহরাঞ্চলে যেখানে বুথের সঙ্গে আবাসিক এলাকার দূরত্ব বেশি, সেই সব ক্ষেত্রে ভোটারদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। তবে কী ধরনের গাড়ি দেওয়া হবে, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। এক কর্তার কথায়, ‘‘ছোট কোনও গাড়ি থাকতে পারে। যাতে একসঙ্গে কয়েক জন বুথে যাওয়া-আসা করতে পারেন।’’
আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের মতো এই রাজ্যেও চলছে বুথের বিন্যাস। ভোটারের সুবিধার জন্য বুথ সরানোও হতে পারে। শহরাঞ্চলে ১৪০০ এবং গ্রামাঞ্চলে ১২০০ বেশি ভোটার হলেই বুথ ভেঙে দিতে চায় কমিশন। সেই কাজ শুরুও হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেবে তারা। সেই কাজও শুরু করেছে কমিশন।