প্রতীকী ছবি।
বামফ্রন্টের চেনা ছকের বাইরে আরও বেশি দলকে নিয়ে বৃহত্তর ও বিকল্প মঞ্চ গড়ে তোলার চেষ্টা ফের গতি পেল। দলের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনের পরে এই মর্মেই প্রস্তাব সামনে আনল সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন। পেট্রল, ডিজ়েল, রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন ‘জন-বিরোধী’ নীতির বিরুদ্ধে চলতি মাসেই দেশ জুড়ে যে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে, তাতে আরও বেশি দলকে শামিল করার প্রস্তাবও বাম নেতৃত্বের আলোচনায় এল। আপাতত অন্যান্য দলের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে।
রাজ্যে কিছু দিন আগেও সিপিএমের পাশাপাশি ১৭-১৮টি দলকে আন্দোলনে একসঙ্গে দেখা যেত। কিন্তু গত বছরের বিধানসভা ভোটের সময় থেকে সেই বৃহত্তর মঞ্চের ছবি অমিল। লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং দলের দ্বাদশ রাজ্য সম্মেলনে ফের রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পরে অভিজিৎ মজুমদার সোমবার বলেছেন, বামফ্রন্ট অনেকটা সরকার পরিচালনার মঞ্চের মতো। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নানা ‘জন-বিরোধী’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলতে গেলে বামপন্থী ও সমমনোভাবাপন্ন সব শক্তির আরও বৃহত্তর, বিকল্প মঞ্চ প্রয়োজন। আলিমুদ্দিনে এ দিনই বামফ্রন্ট এবং লিবারেশনের বৈঠক ছিল। কেন্দ্রীয় স্তরে সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং লিবারেশন যৌথ ভাবেই আগামী ২৫ মে থেকে কেন্দ্র-বিরোধী কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। আলিমুদ্দিনের বৈঠকেও লিবারেশনের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, জনস্বার্থের ওই আন্দোলনকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আরও বেশি দলকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত। তার প্রেক্ষিতেই ঠিক হয়েছে, কাল, বুধবার ফের এই বিষয়ে বৈঠক করে রাজ্যে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত হবে। অন্য কিছু দলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করবেন প্রবীণ বাম নেতা বিমানবাবু।
ফ্রন্টের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘প্রতিবাদের কর্মসূচি আমরা তো নিয়েই থাকি। কিন্তু অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে হলে এই ধরনের কর্মসূচিকে আরও প্রসারিত করার দরকার। সেই চেষ্টাই হচ্ছে।’’ তেল-গ্যাসের দাম, বুলডোজ়ার নীতির জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবং ডেউচা-পাঁচামি, আনিস-কাণ্ড, নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা জানাতে গিয়ে লিবারেশনের দীপঙ্করবাবু এ দিন বলেছেন, রাজ্যে বিধানসভা ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে রাজ্য সম্মেলন থেকে তাঁদের নতুন আহ্বান, ‘‘বিজেপিকে একটিও ভোট নয়, তৃণমূলকে একটুও ছাড় নয়।’’ বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে তাঁদের শুধুই ডাক ছিল, বিজেপিকে একটিও ভোট নয়।