(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্রপুরের স্কুলে মারধরের একটি দৃশ্য এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।
এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে নরেন্দ্রপুরের স্কুলে ঢুকে সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় রিপোর্ট তলব করছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তথ্য তলব করা হচ্ছে।
অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে শনিবার তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুরের একটি স্কুলে। অভিযোগ, জনাকয়েক লোক স্কুলের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান। শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রহৃত হন। এক শিক্ষিকা তাঁদের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগও করেন। এমনকি, মারধরের পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলের প্রধানশিক্ষককেই দায়ী করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় তাঁর প্রশ্রয়েই জনাকয়েক বহিরাগত স্কুলে ঢুকে এই তাণ্ডব করেছেন। অন্য দিকে, প্রধানশিক্ষক এই ঘটনাকে ‘জনরোষ’ বলে অবহিত করেছেন। তাঁর দাবি, স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। তার পর থেকে ওই শিক্ষক আর স্কুলে আসেননি। স্কুলের পরিচালন সমিতির সঙ্গে বৈঠক করে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করা হবে। তবে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই বলে দাবি করেন প্রধানশিক্ষক।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ওই স্কুলের ‘স্টাফ রুম’-এর লন্ডভন্ড ছবি। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জিনিসপত্র থেকে স্কুলের কাগজপত্র মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিক্ষিকারা।
শনিবার বিকেলে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ব্রাত্য। সেখানে তিনি জানান, এই বিষয়ে অবশ্যই খবর নেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘১০০ শতাংশ পদক্ষেপ করা হবে! আমি আগে বিষয়টা জানতাম না। কিন্তু কাউকে (আক্রমণকারী) ছাড়া হবে না। এখনই রিপোর্ট তলব করব। যা পদক্ষেপ করার করব।’’
নরেন্দ্রপুর থানার একটি সূত্রে খবর, ওই স্কুলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ বেশ কিছু দিন আগের। এ নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তবে শনিবার আচমকা কেন সেই বিষয়কে কেন্দ্র করে আক্রমণ চালানো হল, তা তদন্তসাপেক্ষ।