—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’দিন আগে রাত ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল কিশোরী। তার পর আর ফেরেনি। আত্মীয় এবং বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। যে ঘরে ওই কিশোরী থাকত, সেখানে একটি চিরকুট মেলে। তাতে লেখা, ‘চিন্তা কোরো না’। শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি সর্ষের ক্ষেতে নিখোঁজ ওই কিশোরীর দেহ মিলল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায়। পরিবারের অভিযোগ, তাদের মেয়েকে বাড়ি থেকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় এক অভিযুক্তকে আটকও করেছে পুলিশ।
অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল মেয়েটি। আত্মীয় বা বন্ধু কারও বাড়িতে খোঁজ না পাওয়া যাওয়ায় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার। শনিবার দুপুরে হরিহরপাড়া থানা থেকে ফোন আসে ওই কিশোরীর বাড়িতে। জানানো হয়, ওই কিশোরীর দেহ মিলেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে একটি সর্ষের ক্ষেতে এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে বলে খবর পায় তারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ শনাক্ত করা হয়। তার দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরীর দুটো চোখই উপড়ে নেওয়া হয়েছে। তার সারা শরীরে অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন। গলায় ফাঁসের দাগ। ওই অবস্থাতেই নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। তড়িঘড়ি দেহ নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া চলছে।
পরিবারের দাবি, স্থানীয় এক তরুণ বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই কিশোরীকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশের কাছে ওই তরুণের নামও জানিয়েছেন মৃতার পরিবারের সদস্যেরা। এমনকি, বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় মেয়েটি ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে দাবি পরিবারের।
পাশাপাশি, বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে তার বাবার মোবাইল একটি ফোন করে কিশোরী। সেটাও ওই অভিযুক্তকেই বলে দাবি করা হয়েছে। মৃতার মা বলেন, ‘‘আমার বাচ্চা মেয়েটাকে ভুল বুঝিয়ে নগদ ১০ হাজার টাকা সমেত বাড়ি থেকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যায়। টাকাটা হাতিয়ে মেয়েকে খুন করে মাঠের মধ্যে ফেলে দিয়ে গিয়েছে। আমি ওই ছেলেটার ফাঁসি চাই।’’
এই ঘটনা নিয়ে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এর থেকে বেশি কিছু এখন বলা যাবে না।’’