প্রাথমিকের দুই স্তরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) হবে চলতি মাসেই। ওই জোড়া পরীক্ষায় প্রার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই জন্য মঙ্গলবার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও-সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে ওই সম্মেলনে ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিজি জিএমপি রেড্ডি এবং অন্যান্য পদস্থ কর্তা।
টেট নিয়ে বিস্তর ডামাডোলের পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষামন্ত্রী এ বার আগেভাগে লাগাম ধরছেন বলে শিক্ষা শিবিরের ধারণা। উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক বাছাইয়ের ‘টেট’ হবে ১৬ অগস্ট। পাঁচ লক্ষ ছাত্রছাত্রী ওই পরীক্ষা দেবেন। আর ৩০ অগস্ট হবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের টেট। সেই পরীক্ষায় বসছেন ২২ লক্ষ প্রার্থী। দু’টি পরীক্ষাই হবে রবিবারে। ছুটির দিনে বাস ও রেল পরিষেবা যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ২০১২ সালে যে-প্রার্থী যে-কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন, এ বার সেখানেই তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। মূলত জেলাশাসকেরাই পরীক্ষার বিষয়টি দেখভাল করছেন। সাহায্য করছেন শিক্ষা দফতরের অফিসারেরা। লালবাজারে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতায় যে-সব কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে, সেখানে পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।
কেন্দ্র বদল
বন্যা-পরিস্থিতির জন্য বর্ধমান ও নদিয়া জেলায় টেটের কিছু কেন্দ্র রদবদল করা হয়েছে। বর্ধমানের তিন জায়গায়, নদিয়ার শান্তিপুরে চারটি ও নবদ্বীপে পাঁচটি টেট কেন্দ্র বদলাচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ভুল করে যদি কোনও পরীক্ষার্থী পূর্বনির্ধারিত কেন্দ্রে চলে যান, তাঁকে পরিবর্তিত কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে প্রশাসনের তরফে গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নদিয়ার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘ভিডিও-সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করা গিয়েছে।’’
প্রসঙ্গ ‘ওয়েটেজ’
কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের ‘ওয়েটেজ’ বা অভি়জ্ঞতাকে যথোচিত মূল্য দেওয়ার বিষয়টি বহাল রাখার ইঙ্গিত মিলেছে মঙ্গলবার। ওই শিক্ষকদের সংগঠন ‘কুটাব’-এর সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ জানান, এ দিন তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে ওই ওয়েটেজ বহাল রাখার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
রাজ্যের শিক্ষা দফতর ২২ জুলাই একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, কলেজ সার্ভিস কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা তাঁদের অভিজ্ঞতার জন্য কোনও মূল্য বা বাড়তি নম্বর (ওয়েটেজ) পাবেন না। গৌরাঙ্গবাবু জানান, এত দিন ওই শিক্ষকেরা পড়ানোর অভিজ্ঞতার জন্য বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ১.৫ নম্বর পেয়ে আসছিলেন। সেটা বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা আন্দোলন শুরু করেন। তার পরেই এ দিনের বৈঠকে ওই ওয়েটেজ বহাল রাখার আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে পার্থবাবুর আশ্বাস, তাঁদের পূর্ণ সময়ের কাজের দাবি এবং বেতন-কাঠামোর বিষয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।