শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রস্তাব নতুন শিক্ষানীতিতে। ফাইল চিত্র।
গত মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যে নতুন শিক্ষানীতি চালুর প্রস্তাব পাশ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রস্তাবে সায় দেওয়ার পর তা কী ভাবে কার্যকর করা যায়, সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সেই প্রস্তাবের একটি অংশে রাজ্যের স্কুলশিক্ষকদের পদোন্নতির উল্লেখ রয়েছে। তবে ঠিক কী কী বিষয়ের উপর ভিত্তি করে পদোন্নতি হবে, তা এখনও স্থির হয়নি বলেই বিকাশ ভবন সূত্রে খবর। নতুন শিক্ষানীতি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ার পর তার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা চলছে। সেই আলোচনার একটি অংশ হচ্ছে শিক্ষকদের পদোন্নতির বিষয়টি।
অবশ্য পুরোপুরি সরকারি স্কুলে দীর্ঘ দিন ধরেই শিক্ষকদের পদোন্নতির পদ্ধতি চালু রয়েছে। ‘কেরিয়ার অ্যাডভান্স স্কিম’ (সিএএস) পদ্ধতিতে ওই শিক্ষকদের কর্মজীবনের ৮, ১৬ এবং ২৪ বছরে পদোন্নতি ঘটে। কিন্তু সরকার অনুমোদিত, সরকার পোষিত কিংবা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকদের পদোন্নতি হয় না। তাই এ বারের নতুন শিক্ষানীতিতে শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রস্তাব রয়েছে। নতুন এই নীতি কার্যকর হলে ওই সমস্ত স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও পদোন্নতির সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা নতুন শিক্ষানীতিতেও এই পদোন্নতির উল্লেখ রয়েছে। তবে তা শর্তসাপেক্ষে।
দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলির পদোন্নতির দাবিতে সোচ্চার ছিল। দেরিতে হলেও নতুন শিক্ষানীতিতে শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রস্তাব স্থান পাওয়ায় খুশি শাসকদলের শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার নতুন শিক্ষানীতিতে পদোন্নতির বিষয়টি প্রস্তাব করায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুশি। কারণ, ৩০ বছর এক জন সরকারি কর্মচারির জীবনে একাধিক পদোন্নতির সুযোগ থাকলেও, শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তেমন নিয়ম নেই। এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকার যদি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পদোন্নতি হয়, তাতে যেমন তিনি আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন, তেমনই সামাজিক ভাবেও তাঁর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। ফলে ওই শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের জন্য আরও বেশি কিছু করে দেখানোর অনুপ্রেরণা পাবেন।’’
পাল্টা বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে নতুন শিক্ষানীতিতে যে শিক্ষকদের পদোন্নতির প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা অবশ্যই ভাল। কিন্তু আমরা জেনেছি, এ ক্ষেত্রে শর্তসাপেক্ষে এই পদোন্নতি হবে। তাই আমাদের দাবি, পদোন্নতির ক্ষেত্রে যেন কোনও শর্ত আরোপ না করা হয়। কারণ, এক জন শিক্ষক তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন দিয়েই পদোন্নতির দাবি অর্জন করেন। তাই সরকারের উচিত, শর্তসাপেক্ষের বিষয়টি তুলে নিয়ে শিক্ষকদের পদোন্নতির রাস্তা প্রশস্ত করা।’’