রুমেনের অ্যাকাউন্ট থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে ট্রান্সফার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। — ফাইল ছবি।
মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণায় অভিযুক্ত রুমেন আগরওয়ালকে ৪ কোটি টাকা দিয়েছিলেন আমির খান! ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল সেই টাকা। তদন্তে নেমে এমনটাই দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই নিয়ে রুমেনকে জেরা করে অনলাইন গেমিং অ্যাপ প্রতারণা কাণ্ডে আরও তথ্য পেতে চায় ইডি। সে কারণে রুমেনকে ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে চাইল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। নগর দায়রা আদলতে এই রায়দান আপাতত ‘সংরক্ষিত’ রয়েছে। ৩ নভেম্বর রুমেনকে আবার আদালতে উপস্থিত করা হবে।
অনলাইন গেমিং অ্যাপ প্রতারণা কাণ্ডে সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার হয়েছিলেন গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খান। তাঁকে জেরা করে চলতি মাসে গ্রেফতার করা হয় উল্টোডাঙার বাসিন্দা রুমেনকে। তাঁকে জেরা করে এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে ইডি জানিয়েছে, এই কাণ্ডে কয়েকশো কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ইডির আরও দাবি, রুমেনকে ৪ কোটি টাকা দিয়েছিলেন আমির। আরও টাকা দিয়েছিলেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে রোমেনের অ্যাকাউন্টে এই টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন আমির। ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা। কেন হয়েছিল, সেই কারণ জানতে রুমেনকে জেরা করা হচ্ছে।’’ তবে আইনজীবীর অভিযোগ, এই বিষয়ে সহায়তা করছেন না রুমেন।
আইনজীবী অরিজিৎ আরও জানিয়েছেন, রুমেনের ওয়ালেট থেকে অন্য ওয়ালেটে টাকা লেনদেন হয়েছে। সেগুলিও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। রুমেনের ওয়ালেট থেকে ট্রান্সফার হওয়া কিছু টাকা আবার কোনও এক ব্যক্তির জন্য আমেরিকান ডলারে পরিণত করা হয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য সাড়ে চার লক্ষ টাকা। সেই ব্যক্তি কে, তার খোঁজ করছে ইডি। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, রুমেনের অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে তিনশো অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে। এ সব কারণেই আরও কিছু দিন রুমেনকে হেফাজতে রেখে জেরা করতে চায় ইডি।
গত সেপ্টেম্বরে আমিরের গার্ডেনরিচের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিছানার তলা থেকে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার করেছিল ইডি। পরে তাঁকে গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সূত্র ধরেই চলতি মাসে ‘আমির-ঘনিষ্ঠ’ কয়েক জন ব্যবসায়ীর যাদবপুর, উল্টোডাঙা, পার্ক স্ট্রিটের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। ব্যবসায়ী রুমেনের উল্টোডাঙার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। ইডি সূত্রের খবর, সেই তল্লাশি অভিযানে উদ্ধার হয়েছে দেড় কোটি টাকা। ২০ অক্টোবর দিনভর জেরার পর গ্রেফতার করা হয় রুমেনকে। তিনি এখন ইডি হেফাজতে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, অ্যাপ প্রতারণা মামলায় ইতিমধ্যে আমিরের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার হদিস মিলেছে। ইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, আমির খানের সঙ্গে গত এক বছর ধরে ঘনিষ্ঠতা ছিল রুমেনের।