বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করল ইডি। ফাইল চিত্র।
এ বারে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করল ইডি। বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাঁকে ডাকা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তবে বিশদে কিছু বলতে চাননি সুজয়। আর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমন পদক্ষেপে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল।
কয়েক মাস আগে পুরুলিয়া জেলারই বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোকে দিল্লিতে তলব করেছিল ইডি। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত আছেন, এ কথা জানিয়ে তিনি তা এড়িয়ে যান। সাংবাদিক বৈঠক করে সুজয় জানিয়েছেন, তিনি দিল্লি যাবেন। তবে দু’টো দিন বাদে।
বুধবার ইডি-র নোটিস পেয়েছেন তৃণমূলের জেলা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয়। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘১৪ নভেম্বর শিশু দিবস এবং ১৫ নভেম্বর বিরসা মুন্ডার জন্মদিন পালনে জেলার অনুষ্ঠানের আমিই আয়োজক। ইডি-কে চিঠি দিচ্ছি, দু’টো দিন বাদে তলব করা হলে আমি যাব। বেশ কিছু নথি জমা দিতে বলা হয়েছে। তা নিয়েই যাব। স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূর নথি দিতেও আমি প্রস্তুত।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘হাপিস করার জন্য টাকা আমার কাছে কোথা থেকে এল?’’ সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, যদি কিছু প্রমাণিত না হয়, তা হলে তিনি ইডির কাছে ‘ক্লিনচিট’ শংসাপত্র চাইবেন। না পেলে আইনের পথে যাওয়ার কথা ভাবতে পারেন।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী গত জুনে পুরুলিয়ার বলরামপুরে সভায় দাবি করেছিলেন, রঘুনাথপুরের কয়লা মাফিয়ার ডায়েরিতে সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর নাম রয়েছে। পুলিশের এক আইসি-র থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইডি দিল্লি কোর্টে যে চার্জশিট দিয়েছে, তাতেই এই নামগুলি রয়েছে। সুজয় এ দিন বলেন, ‘‘দিল্লিতে রাজত্ব করা দলের নেতারা আগেই এখানে এসে আমাদের নাম বলে জানিয়েছিলেন, ইডি-সিবিআই ডাকবে। সেই মতো ডাকছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ারও অভিযোগ, ‘‘পায়ের তলায় মাটি সরছে বলেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ সব করানো হচ্ছে। আমরা রাজনৈতিক ভাবেই এর মোকাবিলা করব।’’
বিরোধীরা এ নিয়ে সরব। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার দাবি, ‘‘ভোট লুট করে জেলা পরিষদ দখল করেছিল তৃণমূল। তার পরে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে। তার তদন্ত হবে, স্বাভাবিক।’’ সিপিএম জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়েরও বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির তদন্ত হোক।’’