গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যের রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে সমস্যায় পড়েছে ইডি। তারা জানতে পেরেছে, রেশন ব্যবস্থায় অনিয়ম নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ জমা পড়লেও, তার তদন্ত সে ভাবে হয়নি। রেশন নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কয়েকশো কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে ইডি। তবে তাদের বিশ্বাস, রেশন নিয়ে জমা পড়া এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখলে আরও কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির খোঁজ মিলবে। তাই এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশকেই বিশেষ পরামর্শ-সহ একটি চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
ইডি সূত্রে খবর, খুব সম্প্রতিই ওই চিঠি গিয়েছে রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালবীয়ের কাছে। চিঠিতে ইডি জানিয়েছে, রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে কলকাতা পুলিশ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পুলিশের কাছে যে সমস্ত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার বিস্তারিত তদন্ত হয়নি। যেহেতু ইডি কেবলমাত্র আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত তছরুপেরই তদন্ত করতে পারে, তাই রাজ্য পুলিশের ডিজিকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত করতে বলেছে ইডি। শুধু তা-ই নয়, ইডি সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে তারা রাজ্য পুলিশকে জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে। এ ব্যাপারে যদি কোনও তথ্যপ্রমাণ বা সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে, তবে তা দিয়ে রাজ্য পুলিশকে সাহায্যও করতে পারে ইডি।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। গ্রেফতার করা হয়েছে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকেও। সম্প্রতি এঁদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও জমা দিয়েছে ইডি। তাতে বলা হয়েছে, সরকারি তহবিল থেকে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের আনুকূল্যে অন্তত ৪৫০ কোটি টাকা গিয়েছে বাকিবুরের হাতে। ইডির দাবি, বাকিবুর তাঁর সংস্থার ৫০ কর্মীর নামে ভুয়ো কৃষক হিসেবে অ্যাকাউন্ট খোলে। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে ধান কেনার নামে ৪৫০.৩১ কোটি টাকার ফান্ড রিলিজ করা হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনশিয়াল কমোডিটি সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেডের তরফে। যার মাথায় রয়েছেন স্বয়ং মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়।
ইডি সূত্রে খবর, চিঠিতে রাজ্য পুলিশকে এ-ও বলা হয়েছে যে, ২০২০ সাল থেকে এই সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হতে শুরু করেছে। তখন থেকেই এই সমস্ত অভিযোগের তদন্ত হলে দুর্নীতিতে অনেক আগই রাশ টানা যেত। তবে দেরি হলেও বেশি দেরি হয়নি— এমনই ইঙ্গিত দিয়ে ইডি জানিয়েছে, এখনও এই মামলাগুলির বিস্তারিত তদন্ত করলে তারা সেই তদন্তে সাহায্য করতে প্রস্তুত।