জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তাতে জানানো হয়েছে, ভুয়ো ধান সংগ্রহ এবং পিডিএস (গণবণ্টন ব্যবস্থা) রেশন খোলাবাজারে পাচারের অভিযোগে ২৭ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের বন এবং অচিরাচরিত শক্তির উৎস দফতরের মন্ত্রীকে। এর আগে ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি খাদ্য দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রীকে ইডির হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
রাজ্য পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় এফআইআর দায়ের করেছিল। তাতে অভিযোগ ছিল, গণবণ্টন ব্যবস্থা (পিডিএস)-এর ভর্তুকি দেওয়া আটা, ময়দা বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই সঞ্চয় এবং বিক্রি করছে বেশ কয়েক জন। কলকাতা পুলিশের করা কিছু এফআইআরে অভিযোগ ছিল, ভুয়ো কৃষকদের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন বেশ কয়েক জন চালকলের মালিক। তার মাধ্যমে কৃষকদের জন্য বরাদ্দ এমএসপি (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) পকেটস্থ করছেন তাঁরা। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নেমেছিল ইডি।
ইডি তদন্তে নেমে জানতে পারে, পিডিএস-এর অন্তর্গত ৩০ শতাংশ রেশন খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড, আরএসকিওয়াই, অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার সুবিধাভোগীরা। এই দুর্নীতির লাভ পেতেন চালকলের মালিক এবং পিডিএস বণ্টনকারীরা। পাশাপাশি, কৃষকদের নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে ধানচাষীদের জন্য বরাদ্দ ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও আত্মস্যৎ করতেন। এই কাণ্ডে অন্যতম প্রধান এক সন্দেহভাজন জানিয়েছেন, এক কুইণ্টালে ২০০ টাকা করে আয় করতেন চালকলের মালিকেরা। যা আদতে কৃষকদের থেকে পাওয়ার কথা ছিল সরকারি সংস্থাগুলির।
এর আগে গত ১৪ অক্টোবর ময়দা এবং চালকলের মালিক বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে একই মামলায় ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এই ঘটনায় ১১ এবং ২৬ অক্টোবর, ৪ নভেম্বর একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। ১.৪২ লক্ষ টাকা নগদ-সহ বেশ কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভুয়ো সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৬.৮৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।