শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ। —ফাইল চিত্র ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার সক্রিয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ চিনার পার্কের কাছে যে আবাসনে থাকতেন, সেই আবাসনেই তল্লাশি অভিযান শুরু করে ইডির তদন্তকারী দল। তদন্তকারী আধিকারিকেরা আবাসনে গিয়ে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেন বলেও সূত্রের খবর। সূত্রের খবর, আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলার পর কুন্তল যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেখানেও গিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। কিন্তু সেখানে বর্তমানে অন্য একটি পরিবার বাস করে। তাঁদের সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলার পর ইডি আধিকারিকেরা ওই আবাসন থেকে বেরিয়ে যান।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে গরু পাচার মামলার মূল অভিযুক্ত এনামুল হকেরও। তবে কোন বিষয়ে তদন্ত চালাতে ইডি ওখানে পৌঁছেছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই বছরের জানুয়ারি মাসে শিক্ষক নিয়োগ মামলার তদন্তে নেমে ইডির দু’টি দল চিনার পার্ক এলাকার ওই আবাসনেরই জোড়া ফ্ল্যাটে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। পরে ওই দু’টি ফ্ল্যাটের একটিতে জড়ো হন তদন্তকারীরা। সেখানেই প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি এবং দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ-পর্বের পর তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তলকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ওই দু’টি ফ্ল্যাটের থেকে বেশ কিছু নথিও উদ্ধার হয়েছিল বলে ইডি জানিয়েছিল। এর পর তদন্তের জল বহু দূর এগিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একে একে অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমানে কুন্তল রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
তবে কুন্তলের গ্রেফতার প্রায় ১০ মাস পরে আবার ওই একই আবাসনে ইডি কেন তল্লাশি চালাচ্ছে, তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। ইডি কোন মামলা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে প্রথম দিকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তল্লাশির সময়ে সামনে এসেছিল রাশিকৃত টাকা। যেখানে একে একে গ্রেফতার হয়েছেন শিক্ষা দফতরের তাবড় কর্তাব্যক্তিরা। তদন্ত চলাকালীন গ্রেফতার হয়েছেন নদীয়ার পলাশীপাড়ার বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এবং মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। শহর ছাড়িয়ে জেলায় তৃণমূলের ছোট-মাঝারি নেতা, তাঁদের সঙ্গী বা পরিচিতদের নাম সামনে আসতে শুরু করে তদন্ত এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে। তদন্ত চলাকালীন কুন্তল এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো যুবনেতারাও গ্রেফতার হন।