রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তাঁর শ্বশুর, রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন দু’মাসেরও বেশি আগে। বার বার তলব করা সত্ত্বেও গরহাজির থাকার পরে এত দিনে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মুখোমুখি হলেন পার্থের বিদেশবাসী জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। সোমবার তাঁকে টানা সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ইডি-র তদন্তকারীরা।
২৩ জুলাই পার্থকে গ্রেফতারের পরে বিদেশে কর্মরত কল্যাণময় এবং পার্থের মেয়ে সোহিনী চট্টোপাধ্যায়কে বার বার ই-মেল করে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র আঞ্চলিক দফতরে তলব করা হয়েছিল। কিন্তু কল্যাণময়-সোহিনী তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দেননি। ইডি সূত্রের খবর, কল্যাণময় সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরে তদন্তকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ দিন তাঁকে তলব করা হয়েছিল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ইডি-র অফিসে হাজির হন কল্যাণময়।
এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত পার্থ, তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং তাঁদের ছ’টি সংস্থার বিরুদ্ধে ১৯ সেপ্টেম্বর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করেছে ইডি। সেই চার্জশিটে ইডি অভিযোগ করেছে, পার্থ তাঁর পরিবারের লোকেদের নিয়ে প্রয়াত স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেছিলেন। এবং প্রায় ১৫ কোটি টাকা খরচ করে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় একটি বেসরকারি স্কুল তৈরি করেছিলেন সেই ট্রাস্টের মাধ্যমেই। ‘বাবলি চট্টোপাধ্যায় মেমোরিয়াল’ নামে ওই ট্রাস্টে বিভিন্ন অজ্ঞাতপরিচয় সংস্থা থেকে টাকা জমা হয়েছিল। সেই টাকা স্কুলের জমি অধিগ্রহণ এবং স্কুলভবন নির্মাণে খরচ করা হয়েছে। কল্যাণময় ওই স্কুলের চেয়ারম্যান। কল্যাণময়ের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক। কল্যাণময়ের সেই আত্মীয়ের বাড়ি ও স্কুলে তল্লাশি চালানো হয়েছে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এবং কল্যাণময়ের সেই আত্মীয়কে।
ইডি-র দাবি, পার্থের তৈরি ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য কল্যাণময়। সোহিনী ও কল্যাণময়ের নামে বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হদিসও পাওয়া গিয়েছে। সেই সব সম্পত্তি কিনতে যে-টাকা লেগেছে, তার উৎস খুঁজছে ইডি। তদন্তকারীরা জানান, এ দিন ওই সব বিষয়ে কল্যাণময়কে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে লিখিত বয়ান নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কল্যাণময় তদন্তে সহযোগিতা করেছেন বলেও জানাচ্ছে ইডি। তদন্তকারীরা জানান, কল্যাণময়কে ফের তলব করা হবে। তাই তাঁকে আপাতত দেশ ছাড়তে বারণ করা হয়েছে।
ইডি সূত্রের খবর, এ দিন আলিপুর মহিলা জেলে তদন্তকারীরা প্রায় চার ঘণ্টা ধরে জেরা করেন অর্পিতাকেও।