Shahjahan Sheikh

শাহজাহান এবং ভাইয়ের গাড়ির হদিস পেল ইডি, দোকানের মালিক বললেন, ‘পুলিশকে সব জানিয়েছি’

যেই দোকানের গুদামে এই গাড়ি রাখা ছিল, তার মালিক আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁর বড় ছেলে জায়গাটি ভাড়া দিয়েছিলেন শাহজাহানকে। স্থানীয় থানায় বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েও ছিলেন।

Advertisement

সারমিন বেগম

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৮:৪৩
Share:

গুদাম থেকে বার করা হচ্ছে শাহজাহানের গাড়ি। — নিজস্ব চিত্র।

শাহজাহান শেখের ফোনের বিষয়ে তথ্য পেয়েছে সিবিআই। সেই আবহেই সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা শাহজাহানের একটি গাড়ির হদিস পেল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁর ভাই আলমগীরেরও একটি গাড়ির হদিস পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সন্দেশখালিতে শাহাজাহান মার্কেটের কাছে একটি মুদি দোকানের গুদামের কাছে রাখা ছিল সেই গাড়ি। ইডির দাবি, সেগুলি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যেই দোকানের গুদামে এই গাড়ি রাখা ছিল, তার মালিক আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁর বড় ছেলে জায়গাটি ভাড়া দিয়েছিলেন শাহজাহানকে। স্থানীয় থানায় বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েও ছিলেন। দু’টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে ইডির তরফে।

Advertisement

শাহজাহান মার্কেটে রয়েছে একটি মুদি দোকান। তার সঙ্গেই রয়েছে গুদাম। গুদামের দরজা তালাবন্ধ ছিল। ইডি আধিকারিকেরা সেই তালা খোলান। তার পর দেখা যায়, গুদামে রয়েছে আইসক্রিম রাখার ফ্রিজার। সেখানেই রয়েছে চারটি গাড়ি। তার মধ্যে একটি শাহজাহান এবং অন্যটি তাঁর ভাই আলমগীরের। সেগুলি ‘থর’ এবং এসইউভি গাড়ি। যে দোকান সংলগ্ন গুদামে ওই গাড়ি রাখা হয়েছিল, সেই দোকানের এক কর্মী বলেন, ‘‘কার গাড়ি, জানি না। চালক গাড়ি রাখেন, জানি।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, শাহজাহানকে গাড়ি রাখতে দেখেননি তিনি।

যাঁর জায়গায় গাড়িটি রাখা, সেই মোসেল্লেম শেখকে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ফোন করা হয়েছিল। তিনি জানান, তাঁর বড় ছেলে গাড়ি রাখার জন্য শাহজাহানকে তিন হাজার টাকায় জায়গাটি ভাড়া দিয়েছিলেন। গত ডিসেম্বর নাগাদ। মোসেল্লেম জানিয়েছেন, সেই সময় তিনি সন্দেশখালিতে ছিলেন না। শাহজাহানের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে তিনি স্থানীয় থানায় গিয়ে মৌখিক ভাবে গাড়ি রাখার কথা জানিয়েছিলেন। থানা থেকে গাড়ি বার করে দেওয়ার ‘উপদেশ’ দিয়েছিল বলে জানান তিনি।

Advertisement

শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত একটি মামলায় বৃহস্পতিবার সন্দেশখালির কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি অভিযানে যান ইডির আধিকারিকেরা। ধামাখালির কাছে একটি পাইকারি মাছের বাজার এবং ওই বাজারের অন্যতম অংশীদার নজরুল মোল্লার বাড়িতেও তল্লাশি চালান তাঁরা। এর পরেই শাহজাহান মার্কেটের ওই গুদামে তালা খুলে তল্লাশি চালানো হয়। সেখানেই চোখে পড়ে চারটি গাড়ি। তার মধ্যে একটি শাহজাহান এবং অন্যটি তাঁর ভাই আলমগীরের নামে।

অন্য দিকে, শাহজাহানের ফোনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, তারা জেনেছে যে ওই ফোন নষ্ট করা হয়নি। ফোনটি কোথায় থাকতে পারে সে ব্যাপারেও কিছু তথ্য এসেছে তাদের হাতে। সিবিআই সূত্রে খবর, জেরায় এই সব তথ্য জানিয়েছেন শাহজাহান নিজেই। তদন্তকারীদের শাহাজাহান জানিয়েছেন, ফোনে বিপদ ঘনাতে পারে বুঝেই সেটি সরিয়ে ফেলেছিলেন তিনি।

সিবিআই মনে করছে, ইডির উপর হামলার ঘটনায় শাহজাহানের ফোন একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র। তারা এ-ও মনে করছে যে, শাহজাহানের ওই ফোনে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে। ইডি-মামলা তো বটেই, তার পাশাপাশি রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা এমনকি, যে নতুন আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি, সে বিষয়েও অনেক অজানা সূত্র হাতে আসতে পারে শাহজাহানের মোবাইল থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement