আটক ব্যক্তির নাম সুব্রত মালাকার। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সোদপুরের এক ব্যক্তির বাড়িতে দিনভর তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র গোয়েন্দারা। সুব্রত মালাকার নামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে সকালে হানা দেওয়ার পর থেকে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ আর তল্লাশি। পরে তাঁকে নিয়ে বেলঘরিয়ার একটি আবাসনেও অভিযান চালানো হয়। এসএসসি ‘দুর্নীতি’-কাণ্ডে রাজ্য জুড়ে শোরগোলের আবহে হঠাৎ করে হিসাবরক্ষক সুব্রতের বাড়িতে ইডি হানায় প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র তদন্তেই ওই তল্লাশি অভিযান। যদিও পরে ইডি সূত্রে খবর মেলে, বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে অসঙ্গতির অভিযোগের ভিত্তিতেই সুব্রতের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাঁকে নিয়ে বেলঘরিয়ার একটি আবাসনেও যান ইডি আধিকারিকেরা। সেখান থেকে আবার সোদপুরের বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় সুব্রতকে।
সোদপুরের রাজেন্দ্রপল্লি এলাকায় সোমবার সাতসকালে সুব্রতের বাড়িতে হানা দেয় ইডির একটি দল। সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্কের কর্মীদেরও। কী কারণে অভিযান, সে ব্যাপারে কিছুই জানা যায়নি। তল্লাশি অভিযানের সময় চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখে তদন্তকারী সংস্থা। এর পর তাঁকে বেলঘরিয়ার একটি আবাসনে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইডি সূত্রে খবর, ওই আবাসনে তল্লাশি চালানোর পর সুব্রতকে আবার তাঁর সোদপুরের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আরও কিছু ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ ‘দুর্নীতি’-কাণ্ডে গত ২৪ অগস্ট গ্রেফতার করা হয়েছিল ‘মিডলম্যান’ প্রদীপ সিংহকে। অভিযোগ, এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের খুঁজে আনতেন তিনি। তার পর বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। তাঁকে জেরা করে সল্টলেকের যে সংস্থায় তিনি কাজ করতেন, সেখানে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই গ্রেফতার করা হয় প্রসন্নকুমার রায়কে। তিনিও মিডলম্যান বলে জানা যায়। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, সল্টলেকের জিডি ব্লকে প্রসন্নের গাড়ি ভাড়া দেওয়ার সংস্থায় কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করতেন ‘মিডলম্যান’ প্রদীপ। ওই সংস্থার গাড়ি শিক্ষা দফতরে ব্যবহার করা হত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার দফতরেও প্রসন্নের সংস্থার গাড়ি ব্যবহার করা হত বলে সূত্রের দাবি। শান্তিপ্রসাদকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পদাধিকারী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। বর্তমানে দু’জনেই জেল হেফাজতে রয়েছেন।