‘অফুরন্ত সোনার খনি’, নিয়োগ মামলায় নয়া বিশেষণ ব্যবহার করল ইডি। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের ‘মাস্টারমশাই’ বলে অভিহিত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই দুর্নীতিকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে আদালতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, “আগেই জানিয়েছিলাম যে, আমরা সোনার খনির মধ্যে প্রবেশ করেছি। অয়ন শীলের গ্রেফতারির পর দেখছি এই খনি অসীম এবং অফুরন্ত।” শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয় ইডি হেফাজতে থাকা শান্তনুকে।
শান্তনুর অপরাধমূলক কার্যকলাপের ব্যাপকতা বোঝাতে ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভুয়ো কোম্পানি খুলে তাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। কোম্পানি খোলার জন্য ডামি ডিরেক্টর নিয়োগ করা হয়েছে বলেও আদালতে দাবি করে ইডি। শান্তনুর বিরুদ্ধে ভুয়ো কোম্পানির মাধ্যমে সম্পত্তি কেনা এবং কালো টাকা সাদা করার তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলেও আদালতে দাবি করেন ইডির আইনজীবী। শান্তনুর সঙ্গে প্রভাবশালী যোগ বোঝাতে ইডির তরফে এ-ও দাবি করা হয় যে, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রে পার্থ মাস্টারমশাই ছিলেন আর শান্তনুরা স্টুডেন্ট ছিলেন। প্রাক্তন মন্ত্রীর দেখানো পথেই শান্তনুরা হেঁটেছেন বলে আদালতে দাবি করে ইডি। ইডি আরও জানায় যে, শান্তনুর সূত্রে দুর্নীতিতে আরও বেশ কিছু প্রভাবশালীর নাম পাওয়া গিয়েছে।
শান্তনুর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। এই সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে জমা দেন তিনি। শান্তনুর জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। অন্য দিকে ইডি হুগলির বলাগড়ের প্রাক্তন যুবনেতার জামিন আর্জির বিরোধিতা করে তাঁর হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানায়। ইডির তরফে শান্তনুকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আর্জি জানানো হয়। শান্তনুর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুক্ত থাকার একাধিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে আগেই জানিয়েছিল ইডি। পরে শান্তনু-ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়নের সল্টলেকের অফিস থেকে চাকরিপ্রার্থীদের উত্তরপত্র এবং পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি মিলেছে বলে জানায় ইডি। সেই অয়নের প্রসঙ্গও উঠে আসে ইডির আইনজীবীর কথায়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে শান্তনুকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।