Jyotipriya Mallick

সন্দেশখালির জমি দখলের নেপথ্যেও বালু, দাবি ইডির

আদালতে জমা দেওয়া নথিতে ইডির আরও দাবি, বালুর ছত্রচ্ছায়ায় মাসিক বেতনভুক শ’খানেক জবরদখলকারী প্রায় এক বছর ধরে সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লকে জমি দখল করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২৪ ০৫:১৯
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সন্দেশখালিতে যাঁরা সাধারণ মানুষের জমি ও ভেড়ি দখলে নিযুক্ত ছিলেন, তাঁরা আদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিকেরই ‘লোক’ বলে এ বারে কোর্টে দাবি করল ইডি।

Advertisement

তদন্তকারীদের দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির নেতা শেখ শাহজাহান হেফাজতে থাকাকালীন লিখিত ভাবে এ কথা তাঁদের জানিয়েছেন। আদালতে জমা দেওয়া নথিতে ইডির আরও দাবি, বালুর ছত্রচ্ছায়ায় মাসিক বেতনভুক শ’খানেক জবরদখলকারী প্রায় এক বছর ধরে সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লকে জমি দখল করেছিল। যার আড়ালে ছিলেন শাহজাহান ও তাঁর ভাই শেখ আলমগীর।

সম্প্রতি জোর করে জমি দখল করে সেখানে মাছ চাষের আড়ালে কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করার মামলায় কলকাতা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে শাহজাহান ও আলমগীর-সহ চার জনের বিরুদ্ধে ১১৩ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। অবশ্য ওই আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেনি।

Advertisement

ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “সোমবার ওই চার্জশিট এবং তার সঙ্গে প্রায় সাড়ে চার হাজার পাতার নথি বিচার ভবনের সিবিআই বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। বিচারক সেই সব নথি পর্যবেক্ষণ করে গ্রহণ করবেন।”

এ দিকে এ দিনই ইডি আধিকারিকদের উপরে হামলার অভিযোগে পুলিশের করা মামলায় শেখ শাহজাহানকে জামিন দিয়েছে বসিরহাট আদালত। গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার আকুঞ্জিপাড়ায় শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকদের উপরে হামলার অভিযোগে বসিরহাট জেলা পুলিশ মামলা করেছিল। শাহজাহানের আইনজীবী রাজা ভৌমিক সোমবার জানিয়েছেন, বসিরহাট মহকুমা আদালতে এই মামলায় জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

অন্য দিকে, বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এ দিন শাহজাহান-সহ চার জনের জামিনের আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবী জাকির হোসেন। তদন্তকারী অফিসারের লিখিত দাবি, ২০১১-র পরে সিপিএম-আশ্রিত শাহজাহান লোকসভার এক সাংসদের হাত ধরে জ্যোতিপ্রিয়ের কাছে পৌঁছন। তদন্তকারী অফিসারের দাবি, শাহজাহান লিখিত বয়ানে জানিয়েছেন যে, বেআইনি ভাবে জমি দখল থেকে মাছ চাষ, সব কিছুই জ্যোতিপ্রিয়র মদতেই হত। সরকারি উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের বরাত এবং নানা সুবিধা জ্যোতিপ্রিয়ের‌ মাধ্যমেই শাহজাহান পেয়েছিলেন। গত এক দশকে জ্যোতিপ্রিয়ই তাঁর রাজনৈতিক উত্থানের মূল কান্ডারি বলে লিখিত বয়ানে দাবি করেছেন শাহজাহান। লিখিত বয়ানে তাঁর আরও দাবি, তাঁর সুপারিশেই গ্রাম পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ এমনকি বিধায়ক নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়া হত।

তদন্তকারী অফিসারের দাবি, শাহজাহানের মাথায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর হাত থাকায় বেআইনি ভাবে জমি ও ভেড়ি দখলের অভিযোগ উঠলেও নিষ্ক্রিয় থাকত পুলিশ-প্রশাসন। ধামাচাপা দেওয়া হত শাহজাহানের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ। তদন্তকারী অফিসারের আরও দাবি, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাহজাহান পর্দার আড়ালেই থাকতেন। তাঁর দুই ভাই আলমগীর ও সিরাজুদ্দিন ওরফে সিরাজ ডাক্তার এবং দুই ঘনিষ্ঠ শিবু এবং দিদার বক্স মোল্লা সিন্ডিকেট বাহিনীর মাধ্যমে বেআইনি ভাবে জমি ও ভেড়ি দখল করত।

ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী এ দিন বলেছেন, “১০ জুন অভিযুক্তদের জামিনের আবেদনের শুনানি হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement