West Bengal Recruitment Scam

কুন্তলের থেকে ৭০ লক্ষ নিয়ে পার্থকে ১০ লক্ষ দিতে বলেন ‘কালীঘাটের কাকু’! আদালতে দাবি ইডির

আদালতে ইডির দাবি, কুন্তল ৭০ লক্ষ টাকা সুজয়কে দেন। সুজয়ের কথায় পার্থকে দেন আরও ১০ লক্ষ টাকা। যদিও ইডি জানায়, ‘কালীঘাটের কাকু’ তাদের প্রশ্নের মুখে এই লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৩ ১৩:৩১
Share:

ছবিতে বাম দিক থেকে কুন্তল ঘোষ, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়েছেন বলে আগেই দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই টাকার পরিমাণ ছিল ৭০ লক্ষ। সুজয় শুধু একাই টাকা নেননি, তিনি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও টাকা দিতে বলেছিলেন। সুজয়কে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জিতে আদালতেও এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করল ইডি।

Advertisement

আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়, গত ১ ফেব্রুয়ারি এবং ২ ফেব্রুয়ারি আর্থিক তছরুপ নিয়ন্ত্রক আইনের ৫০ নম্বর ধারা অনুসারে কুন্তলের যে বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়, তাতে তিনি জানান, ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীকে বেআইনি ভাবে টেট পাশ করিয়ে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করাতে চেয়েছিলেন কুন্তল। সুজয় তখন কুন্তলকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, পার্থের সঙ্গে কথা বললেই তাঁর কাজ হয়ে যাবে। এই সময়ে কুন্তল ৭০ লক্ষ টাকা দেন সুজয়কে। সুজয়ের কথাতেই তিনি পার্থকে দেন আরও ১০ লক্ষ টাকা। যদিও ইডি জানিয়েছে, ৩০ মে ‘কালীঘাটের কাকু’ তাদের প্রশ্নের মুখে এই লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অপর ধৃত তাপস মণ্ডলও ‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত যোগাযোগের কথা ইডিকে জানিয়েছিলেন। গত বছর নভেম্বরে তাপসের বয়ান অনুযায়ী, ৩২৩ জন টেট প্রার্থীর তালিকা সুজয়কে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর কাছ থেকে সেই তালিকা পাঠানো হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছে। ইডি আদালতে এ-ও জানিয়েছে যে, সুজয় তাঁর বয়ানে দাবি করেছেন, তিনি মানিককে ২০২১ সালের আগে চিনতেন না। মানিকের সঙ্গে তাঁর কোনও রকম যোগাযোগ আগে ছিল না। কিন্তু তদন্তে ইডির হাতে আসা তথ্য অন্য কথা বলছে। মানিকের হোয়াটস্‌অ্যাপ কথোপকথন ঘেঁটে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা দেখেছেন, তাঁর সঙ্গে সুজয়ের যোগাযোগ রয়েছে অন্তত ২০১৮ সাল থেকে। ওই সময় থেকেই মানিককে বহু টেট প্রার্থীর নথি সুজয় পাঠিয়েছিলেন। পাঠানো হয়েছিল মার্কশিট এবং অ্যাডমিট কার্ডও। অর্থাৎ, সুজয় তথ্য গোপন করতে চাইছেন, সত্যি কথা বলছেন না, দাবি ইডির।

Advertisement

‘কালীঘাটের কাকু’কে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করেছে ইডি। ওই দিন সকালে সিজিও কমপ্লেক্সে তিনি হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তার পর বুধবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। ইডি ‘কাকু’কে আপাতত ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চায়। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও খুঁটিনাটি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই সময় চাওয়া হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দারা। তাঁদের আবেদন মঞ্জুর হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement