দিল্লির ক্যাফে মালিক পুনীত খুরানা। গত মঙ্গলবার আত্মঘাতী হন তিনি। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির ক্যাফে মালিক পুনীত খুরানার মৃত্যু মামলায় প্রশ্নের মুখে পড়েছে তাঁর স্ত্রী মনিকা পাহওয়ার এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের ভূমিকা। আত্মহত্যার আগে একটি ৫৯ মিনিটের ভিডিয়োও রেকর্ড করেন তিনি। যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। ওই ভিডিয়োর একটি অংশে পুনীত দাবি করেন, তাঁর থেকে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু তা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না পুনীতের।
স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার আত্মঘাতী হন পুনীত। বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। এর পরেই স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে পুনীতের পরিবার। পুনীত এবং মনিকার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। আত্মঘাতী হওয়ার আগে একটি ৫৯ মিনিটের ভি়ডিয়ো করেন পুনীত। ওই ভিডিয়োয় খুরানা জানান, বিবাহবিচ্ছেদের মামলার মাঝে তাঁর স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ১০ লক্ষ টাকা চাইছিলেন। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাঁর। এই চাপ সহ্য করতে না পারায় আত্মহত্যা করতে হবে, এমন কথাও বলতে শোনা যায় পুনীতকে।
দিল্লির ওই ক্যাফের মালিক ভিডিয়োর একটি অংশে বলেন, “স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমার উপর ভীষণ অত্যাচার করেছেন। আমি আত্মহত্যা করে নেব।” ভিডিয়োয় তিনি জানান, দুই পরিবারই কিছু শর্তে সম্মত হয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানান। সে ক্ষেত্রে ওই শর্তগুলি তাঁকে মানতেই হত। কিন্তু এর পরেও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা নতুন করে কিছু শর্ত চাপানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পুনীতের।
পুনীতের বক্তব্য, নতুন করে চাপানো ওই দাবি পূরণ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাঁর থেকে ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। পুনীত ভিডিয়োয় জানান, ওই সময়ে দাবি মতো টাকা মেটানো তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই তাঁকে মা-বাবার কাছে হাত পাততে হচ্ছিল বলে মৃত্যুর আগে দাবি করেন দিল্লির ক্যাফে মালিক।
২০১৬ সালে পুণীতের সঙ্গে মণিকার বিয়ে হয়। তাঁর দু’জনে একটি ক্যাফে খোলেন। দু’বছর আগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তার পর দু’জনে একটি বেকারি খোলেন। বর্ষশেষের রাতে পুনীতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, পুনীতকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। আত্মহত্যা না খুন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পুনীতের পরিবার। দিল্লির এই ঘটনার সঙ্গে বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুল সুভাষের মৃত্যু মামলারও যোগ টানতে শুরু করেছেন একাংশের জনতা। অতুলও আত্মঘাতী হওয়ার আগে স্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তোলেন। ঘটনাচক্রে, তাঁরও বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল আদালতে।