লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের জন্য নতুন সুবিধা। ফাইল চিত্র
স্টেশনে পৌঁছে ট্রেনের জন্য হাপিত্যেশ করতে হবে না। কোন ট্রেন কতটা লেটে চলছে আর আপনার স্টেশনে কখন কোন প্লাটফর্মে আসবে তা-ও বাড়িতে বসেই জানা যাবে। এখন ‘হোয়ার ইজ ইওর ট্রেন’ নামে একটি অ্যাপ চালু থাকলেও তাতে সব সময় সঠিক তথ্য মেলে না। এটি রেলের নিজস্ব অ্যাপও নয়। এ বার লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের সব সময় সঠিক তথ্য দিতে নিজস্ব অ্যাপ তৈরি করেছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগ। ‘শিয়ালদহ সাবার্বান ট্র্যাকিং সিস্টেম’ নামের একটি অ্যাপ ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। আপাতত শিয়ালদহ শাখায় এই পরিষেবা মিললেও পরে তা অন্যান্য শাখাতেও চালু হবে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। এই অ্যাপ একটি অভিনব সুবিধাও দেবে যা আগে মিলত না। যদি কোনও ট্রেন বাতিল হয় বা মাঝপথে যাত্রা শেষ হয় তবে যাত্রীদের কাছে আগাম নোটিফিকেশন পাঠাবে এই অ্যাপ।
মোবাইল অ্যাপে দেখার সুযোগ শুধুই নয়, শিয়ালদহ-সহ কয়েকটি স্টেশনে ডিসপ্লে বোর্ডেও দেখা যাচ্ছে লোকাল ট্রেন সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য। কোন ট্রেন কোন প্লাটফর্ম থেকে কখন ছাড়বে সেটা আগেও জানা যেত। কিন্তু এখন ট্রেনের ‘লাইভ লোকেশন’ জানতে পারবেন যাত্রীরা। ট্রেনের নিখুঁত অবস্থান জানাতে স্টেশনে স্টেশনে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড বসাচ্ছে রেল।
ইতিমধ্যেই কার্যকর এই অ্যাপ।
এই ব্যবস্থার যাত্রা শুরু হয়েছে দেশের অন্যতম ব্যস্ত স্টেশন শিয়ালদহ থেকে। এ ছাড়াও এই শাখার যাদবপুর, টালিগঞ্জ, লেক গার্ডেন্স স্টেশনে এমন বোর্ড বসানো হয়ে গিয়েছে। ধাপে ধাপে ডিভিশনের প্রায় সব স্টেশনেই ট্রেনের গতিবিধির নিখুঁত অবস্থান জানানোর বোর্ড বসাবে রেল। কোনও যাত্রী যে ট্রেনটি ধরতে এসেছেন সেটি সেই মুহূর্তে কোথায় রয়েছে তা তিনি মোবাইলে অ্যাপ ব্যবহার ছাড়াও সহজেই জেনে যাবেন।
যাদবপুর স্টেশনে বসছে ডিসপ্লে বোর্ড।
এই ব্যবস্থা কার্যকরের লক্ষ্যে করোনাকালকে কাজে লাগিয়েছে রেল। এই সময় কম ট্রেন ও কম যাত্রী থাকায় শিয়ালদহ শাখার সব ইএমইউ এবং এমইএমইউ রেক-এ জিপিএস ট্র্যাকার বসানোর কাজ সেরে ফেলে রেল। এর মাধ্যমেই রেকগুলির প্রতি সেকেন্ডের অবস্থান রেলের কন্ট্রোল রুমে পৌঁছে গিয়েছে। সেটাই দেখা যাচ্ছে অ্যাপ কিংবা স্টেশনের বোর্ডে। পূর্ব রেলের এক কর্তা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘শিয়ালদহ-সহ সব স্টেশনেই কোন ট্রেন, কখন কোন প্লাটফর্ম থেকে ছাড়বে তা মাইকে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ব্যস্ত স্টেশনে কোলাহলের মধ্যে অনেক সময়ে যাত্রীরা সেই ঘোষণা শুনতে না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এ বার শোনার পাশাপাশি দেখার সুযোগও তৈরি হল। আর অনেক সময়েই নানা কারণে ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ের থেকে দেরিতে চলে। কোনও স্টেশনে অপেক্ষায় থাকা যাত্রী ট্রেনটির অবস্থান আগাম জানতে পারলে তা থেকেও অনেক সুবিধাও পাবেন।’’