—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা চালু করে দিতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আপাতত ১২ মিনিটের ব্যবধানে ট্রেন চলবে বলে ভাবা হয়েছে। বুধবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভি কে শ্রীবাস্তব এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, শুরুতে জোকা-তারাতলা মেট্রোর চেয়ে কিছুটা উন্নত ব্যবস্থায় একটির বদলে দু’টি ট্রেনের পরিষেবা চালু হবে। পূর্ব এবং পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ ধরে ওই দু’টি ট্রেন পর্যায়ক্রমে হাওড়া ময়দান এবং এসপ্লানেডের মধ্যে চলবে। এসপ্লানেড স্টেশনের পরে শিয়ালদহের দিকে ট্রেনের লাইন বদলের জন্য কোনও ক্রসওভার নেই। তবে হাওড়া ময়দান স্টেশনে ঢোকার মুখে ক্রসওভার আছে। মূলত এসপ্লানেডের দিকে ক্রসওভার না থাকার কারণে পাশাপাশি দু’টি সুড়ঙ্গে যে লাইন দিয়ে ট্রেন এসপ্লানেড বা হাওড়া ময়দান পৌঁছবে, সেই একই লাইন দিয়ে ফেরত আসবে। এর ফলে, আপ এবং ডাউন ট্রেনের জন্য নির্দিষ্ট লাইন থাকছে না প্রথম পর্যায়ের পরিষেবা শুরুর সময়ে। একই লাইন পর্যায়ক্রমে আপ এবং ডাউন হিসেবে কাজ করবে। তার জেরে যাত্রীদের ট্রেন ধরার ক্ষেত্রে যাতে বিভ্রান্তির মুখে পড়তে না হয়, তার জন্য একাধিক ডিসপ্লে বোর্ড ছাড়াও নিরন্তর ঘোষণার ব্যবস্থা থাকবে বলে জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। হাওড়া ময়দান, হাওড়া, বি বা দী বাগ এবং এসপ্লানেড— এই চার স্টেশনেই ওই ভাবে পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম রয়েছে দু’টি লাইনের মাঝখানে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোপথের সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার সংলগ্ন অংশের নরম বালি মিশ্রিত মাটিতে বেশি জলের উপস্থিতির কারণে সুড়ঙ্গে বায়ু চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ছোট সুড়ঙ্গের কাজ সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না বলে সূত্রের খবর। ওই কাজের জন্য মাটির গভীরে তরল নাইট্রোজেন পাঠিয়ে বালি এবং জল মিশ্রিত মাটির একাংশকে সাময়িক ভাবে জমিয়ে দেওয়া হবে। এর ফলে ধস নামার পরিস্থিতি তৈরি হবে না। ওই অবস্থায় সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ করা হবে। ভারতে এই প্রথম নাইট্রোজেন ফ্রিজ়িং নামের ওই প্রযুক্তি প্রয়োগ হবে বলে দাবি ভি কে শ্রীবাস্তবের।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সল্টলেক সেক্টর ৫ স্টেশন থেকে তেঘরিয়া হয়ে হলদিরাম মোড় পর্যন্ত আরও সাড়ে ৬ কিলোমিটার পথে সম্প্রসারণের জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ওই কাজের জন্য প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা খরচের ৫০ শতাংশ দেওয়ার প্রস্তাব রাজ্য সরকারকে মাস কয়েক আগে দিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের পক্ষ থেকে অপারগতার কথা জানানো হয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এখন একাই সব খরচ বহনের প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাচ্ছেন বলে খবর। নতুন করে টাকা বরাদ্দ না হওয়া পর্যন্ত সম্প্রসারণ নিয়ে কিঞ্চিৎ অনিশ্চয়তা থাকছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। তবে, কেন্দ্রীয় বাজেটে সামান্য টাকা বরাদ্দ রেখে ওই প্রকল্পকে চালু রাখা হয়েছে। বাম আমলে উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে রাজ্য সরকারের যৌথ অংশীদারিত্ব থাকলেও পরে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা প্রত্যাহার করেন। ফলে, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর, জোকা- এসপ্লানেড, নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর-বারাসতের মতো প্রকল্পগুলি এখন কেন্দ্রের অধীন।