উত্তরবঙ্গে ফুটবলের উন্নতিতে কী করা উচিত?
জবাব: বাঙালির কাছে সব খেলার সেরা যদি ফুটবল হয়, তা হলে একটা কথা স্বীকার করতে কোনও লজ্জা নেই যে বাঙালির ফুটবল সাম্রাজ্যে সব থেকে অবহেলিত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো।
সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে মোহনবাগানে খেলার সময় বা তারও আগে যখন কলকাতার ছোট দলে খেলতাম, তখন উত্তরবঙ্গ থেকে এসে বেশ কয়েকজনকে খেলতে দেখেছি দাপিয়ে। সুভাষ ভৌমিক, সুকল্যাণরা তো এই উত্তরবঙ্গ থেকেই উঠে এসে দাপিয়ে কলকাতা ময়দানে খেলেছে।
যদিও এই প্রতিবেদনের বিষয় অন্য। এ বারের জাতীয় লিগের কলকাতা ডার্বির ফিরতি পর্বের ম্যাচটা শিলিগুড়িতে হতে পারে বলে শুনছি। কিন্তু তা নিয়েও অনেকের অসন্তোষও চোখ এড়াচ্ছে না। অবশ্য নিন্দুকেরা কবেই বা গঠনগত কিছু নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছে?
আমি যদিও মনে করি ফুটবলের প্রসার ঘটাতে গেলে শিলিগুড়িতে যদি আই লিগে কলকাতা ডার্বির ফিরতি পর্বের ম্যাচ দেওয়া হয়, তা হলে এর চেয়ে আনন্দের কিছুই হয় না। এই শিলিগুড়ির ছেলে জাতীয় দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। যে ঋদ্ধিমানকে দেখে শিলিগুড়ি থেকে অনেক ছেলে আজ আসছে ক্রিকেট খেলতে।
আমার প্রশ্নটা ঠিক এখানেই, তা হলে শিলিগুড়ি, ব্যাপক অর্থে উত্তরবঙ্গ থেকে সুভাষ, সুকল্যাণদের মতো ফুটবলার উঠে আসছে না কেন? ফুটবলার জীবন থেকে জানি যে ফুটবল নিয়ে শিলিগুড়ির মানুষের আবেগের অন্ত নেই। আজ যদি সেখানে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের মতো মহাম্যাচ হয়, তা হলে যে ছেলেটা শিলিগুড়ির পাড়ার মাঠে রোজ বল নিয়ে দাপায় সেও চোখের সামনে অর্ণব মণ্ডল, প্রণয় হালদার, রফিকদের দেখে অনুপ্রাণিত হবে। এতে আর কারও নয়, লাভবান হবে বাংলার ফুটবল। কারণ উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় ফুটবল প্রতিবার অভাব নেই। কেবল একটা বড় ম্যাচ নয়। কলকাতা লিগের মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ টেনে আনা হোক শিলিগুড়িতে। এতে খুদে ফুটবলারদের আগ্রহ বাড়বে।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডি-লিট সম্মান নিতে গিয়ে ঠিক এই কথাগুলোই বলেছিলাম। উত্তরবঙ্গের ফুটবলকে তুলে ধরতে সাতটি জেলাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিক মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল। এতে ফুটবলার উঠে আসবে। আমাদেরও বিদেশি ফুটবলারদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।